বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

শুকিয়ে যাচ্ছে নেত্রকোনার নদ-নদী

কংস, মগড়া, সোমেশ্বরী, ধনু, ধলাই অতি পরিচিত হাওর জনপদ নেত্রকোনা জেলার কয়েকটি নদ-নদীর নাম। এ জেলার সমাজ, কৃষি, অর্থনীতি, যোগাযোগ, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে রয়েছে এসব নদ-নদীর প্রভাব ও অবদান। সুদীর্ঘকাল ধরে প্রবহমান এসব নদ-নদী। কিন্ত নির্মম সত্য হচ্ছে, নানা কারণে সেই ঐতিহ্যবাহী নদ-নদীগুলো আজ হারিয়ে যাচ্ছে। নাব্যতা হারিয়ে খালে পরিণত হচ্ছে।

'হাওর অঞ্চল' নেত্রকোনা একটি নদীবিধৌত পলিমাটি গড়া জনপদ। এ জেলার পুরোনো মানচিত্র ও ভূমি রেকর্ডে ৫৭টি নদ-নদী ও ২৮টি বড় খালের (নদীর প্রশাখা) অস্তিত্ব পাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে এর বেশিরভাগই আজ নিশ্চিহ্ন। অর্থাৎ মানচিত্র থেকে চিরতরে মুছে যাচ্ছে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, অতীতে কয়েক দফা ভূমিকম্পে এ অঞ্চলের বেশ কিছু নদী-খাল-বিল-জলাশয় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

এর পরবর্তী সময়ে নদ-নদী হত্যার খড়গ হিসেবে আসে স্লুইস গেট, কালভার্টের বাড়াবাড়ি। অপরিকল্পিত রাস্তা-ঘাট-সেতু এবং বাঁধ নির্মাণও নদী মৃত্যুর বড় কারণ। এসব অত্যাচারের কারণে এক সময় যেসব খরস্রোতা নদী ছিল গোটা নেত্রকোনার প্রাণ এবং কৃষি, যোগাযোগ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার গুরুদায়িত্ব পালন করত যে প্রকৃতিকন্যারা; আজ তারা মৃত, মৃতপ্রায় বা স্রোতহারা।

নেত্রকোনা জেলা শহরের বুক চিরে প্রবাহিত একটি নদীর নাম ‘মগড়া’। মূলত এ নদীকে কেন্দ্র করেই ব্রিটিশরা এক সময়ের ‘কালীগঞ্জ’ বাজারে প্রতিষ্ঠা করেছিল নেত্রকোনা শহর। অতীতে মগড়া ছিল বেসামাল ও উত্তাল। কোনো বাধাই মানত না। আঞ্চলিক ভাষায় এরকম বদমেজাজি বা বিধ্বংসী চরিত্রকেই বলা হয় ‘মগড়া’। কিন্তু আজ আর মগড়ার সে স্বভাব নেই।

উৎসমুখ ভরাট ও পূর্বধলার ত্রিমোহনীতে স্লুইস গেট নির্মাণের কারণে কিংবদন্তীর মগড়া আজ প্রায় মরা, স্রোতহারা। কোথায়ও কোথায়ও ফসলের মাঠ। দখলদাররা দিন দিন দখল করে নিচ্ছে এর বিস্তীর্ণ এলাকা। এটি আজ কচুরিপানা, ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি এক জলাশয়ে পরিণত হয়ে যায় শীতকালে।

জেলা শহরের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ‘ধলাই’। স্থানীয় ভাষায় ‘ধলা’ শব্দটি ‘স্বচ্ছ’ বা ‘সাদা’ শব্দের প্রতিশব্দ। প্রচলিত আছে, ধলাইয়ের পানি এতই স্বচ্ছ ও টলটলে ছিল যা রোদের আলোতে ‘সাদা’ মনে হতো। ঝিকমিক করত। আর এ কারণেই নদীটির নাম হয়েছিল ‘ধলাই’। এককালের বেগবতী ধলাইয়ের কোনো কোনো অংশে এখন পায়ের পাতাও ভেজানো যায় না।

সুসং রাজ্যের ইতিহাস খ্যাত ‘সোমেশ্বর পাঠক’ এর নাম থেকে পাহাড়ি জনপদ দুর্গাপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ‘সোমেশ্বরী’। মেঘালয়ের পাদদেশ থেকে নেমে আসা এ নদীটির চরিত্রও বিচিত্র। শুষ্ক মৌসুমে এটি ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়। বর্ষায় হয়ে ওঠে ভয়াল-বিধ্বংসী। সামান্য বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলেই উপচে পড়ে নদীটির দুই কূল। ফলে বন্যা ও ভাঙনের শিকার হয় বিশাল জনবসতি। এদিকে বর্ষায় পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে এ নদীপথ দিয়ে বয়ে আসে বিপুল পরিমাণ সিলিকা বালি।

নদী উপকূলে এ বালির স্তর পড়ে প্রতি বছর মরুভূমির মতো বিরাণ প্রান্তরে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ কৃষি জমি। আর এসব কারণে বলা যায়, পাহাড়ি জনপদের দুঃখ হয়ে উঠেছে সোমেশ্বরী।

দুর্গাপুর ও কলমাকান্দার ওপর দিয়ে প্রবাহমান আরও দুই পাহাড়ি নদীর নাম ‘আত্রাইখালি’ ও ‘উব্দাখালি’। সোমেশ্বরীর দুই বোন। সোমেশ্বরীর মতো এরাও ‘কীর্তিনাশা’। অনেক কীর্তিই নাশ করেছে। বর্ষায় এদের উপচে পড়া পানিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভাঙনে ক্ষতির শিকার হয়েছে অনেক জনবসতি। ধু ধু বালুরাশিতে পরিণত করেছে অনেক আবাদি জমি। বালি আর পলির স্তর জমে প্রকৃতির এ দুই কন্যাও আজ মৃত্যুর প্রহর গুণছে।

এদিকে কলমাকান্দার লেঙ্গুরা এলাকা দিয়ে প্রবাহিত আরেক বিচিত্র জলধারার নাম ‘গণেশ্বরী’। গারো পাহাড় থেকে নেমে আসা এ নদীটি অনেকটা ঝরনার মতো। বর্ষায় গণেশ্বরী প্রচণ্ড খরস্রোতা হয়ে উঠলেও শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে খাঁ খাঁ করে। গতি পথের বিভিন্ন স্থানে বালির স্তর জমতে জমতে অপার সৌন্দর্যের গণেশ্বরী এখন মৃত্যুপথযাত্রী।

নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ‘কংস’ নদ। এটি জেলার দীর্ঘতম একটি জলধারা। শৈশব-কৈশোরে কংসের প্রমত্তা রূপ দেখে কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছিলেন ‘একবার এসেই দেখুন কংস নদের সঙ্গে সমুদ্রের বেশ মিল আছে…/এখানে গর্জন আছে, শোঁ শোঁ শব্দে হাওয়া ছোটে রাতে/ঢেউ এসে সজোরে আছড়ে পড়ে তীরের নৌকোয়’। কিন্তু দিনে দিনে এর বিস্তীর্ণ অংশ ভরাট হয়ে গেছে। পূর্বধলা ও বারহাট্টার বিভিন্ন এলাকায় কংসের বুক জুড়ে চলছে চাষাবাদ।

জেলার সবচেয়ে খরস্রোতা নদীর নাম ‘ধনু’ (ধেনু)। এটি সুরমার একটি ধারা। হাওড় উপজেলা মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরির ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নৌপথকে কেন্দ্র করেই ভাটি অঞ্চলের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকার নৌপথ গড়ে ওঠেছিল। কিন্তু নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। শুষ্ক মৌসুমে এসব চরে কার্গো, লঞ্চ, ট্রলার আটকে যায়। ফলে ব্যাহত হয় নৌ-পরিবহন।

মানচিত্রে মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরি উপজেলাকে বিভক্ত করেছে ‘চিনাই নদী’। ঝিনুকের আঞ্চলিক নাম ‘চিনাই’ থেকে এর নামাকরণ। ২০-২৫ বছর আগেও এর জলধারা ছিল সচল ও প্রবহমান। কিন্তু গতিপথ রুখে দেওয়ার কারণে ‘চিনাই’ আজ শীর্ণকায়, নীরব, নিথর। একই অবস্থা মোহনগঞ্জের ঘোরাউৎরা ও সাপমারা নদীর। এ ছাড়াও অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে ঠাকুরাকোনার ধনাইখালি, সলি বুবিজান, বারহাট্টা ও কলমাকান্দার মাঝামাঝি গোলামখালি এবং মদনের বালই নদী। অন্যদিকে নেত্রকোনার ৩৪টি নদ-নদী ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে বা মরা খালে পরিণত হয়েছে।

হারিয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলো হচ্ছে- তেওড়াখালি, ধুপিখালি, লাউয়াড়ি, সুরিয়া, সাইডুলি, কানাই, কাওনাল, সোনাই, বাউরী, ছিলা, তুষাই, বিষনাই, বেতাই, পাতকুড়া, সতি, বারুনী, ছেলা, বলী, নয়া নদী, পিয়াইন, নিতাই, বাঁকহারা, কালীহর, বল, বালিয়া, গুনাই, কানসা, রাজেশ্বরী, পাটেশ্বরী, ফুলেশ্বরী, কালিয়ারা, ধোপকলা, জলকান্দি, জল শিমুলকান্দি নদী। মানচিত্রে থাকলেও বেশকিছু নদীর এখন আর কোনো অস্তিত্বই নেই। কোনো কোনোটি টিকে আছে একবারেই সরু খাল বা নালার আকারে।

নদ-নদীগুলো বিলুপ্ত হওয়ায় মহাশোল, বাঘাআইড়সহ নানা প্রজাতির মাছেরও আর দেখা মিলে না। অন্যদিকে জেলার নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থাও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ হারিয়ে পেশা বদল করেছেন মাঝি-মাল্লারা। বদ্ধ জলাশয়ের নামে বেশকিছু নদী ইজারা বন্দোবস্ত দেওয়ায় বেকার হয়ে পড়ছেন মৎস্যজীবীরা।

তবে নদ-নদীর অস্তিত্ব সঙ্কটে পোয়াবারো অবস্থা চলছে দখলদারদের। অনেকটা বাধাহীনভাবেই নদ-নদীর বিস্তীর্ণ অংশ দখল করে নিচ্ছেন তারা। এসব প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার কোনো অভিভাবকই যেন নেই এখানে!

এসব নদ-নদী রক্ষায় অপরিকল্পিত বাঁধ, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণ বন্ধ করতে হবে বলে মনে করছেন পরিবেশ সংশ্লিষ্ট ও স্থানীয়রা। তারা বলেন, সচল করতে হবে নদীর গতিপথ। পরিকল্পনা মাফিক খনন করলেই হয়ত আগামী দিনেও এ নদ-নদীগুলো পানিসম্পদ, সেচ, যোগাযোগ আর প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তাই প্রতিদান হিসেবে নয়, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই এ প্রকৃতিকন্যাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।

বারহাট্টা উপজেলার কংস নদের তীরে অবস্থিত রূপগঞ্জ বাজারের বাসিন্দা রঞ্জন কুমার সাহা জানান, আমি আমার জীবনে এ কংস নদের প্রবল স্রোতে ভেসে সাঁতার কেটেছি। নদীতে পালতোলা নৌকা ছিল। প্রচুর পরিমাণে মাছ ছিল। এখন এ বসন্তকালে এর তলদেশে কোনো পানি নেই। এটি খনন করলে হারানো পরিবেশ ফিরে পাওয়া যেত।

খালিয়াজুরীর ধনু নদীর তীরে অবস্থিত নয়াগাও গ্ৰামের কূষক সুশীল তালুকদার বলেন, স্লুইচ গেট ও বাঁধ তৈরিতে কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। নদী সঠিকভাবে খনন, সেতু নির্মাণ ও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। এতে মাছ উৎপাদন বাড়বে। নদী পথে যোগাযোগ সহজ হবে। বোর ধান চাষে সেচ ও ফসল অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

হাওর উন্নয়ন ও মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, দিনে দিনে এ নদ-নদী ভরাট, বিলীন ও গতিপথ পরিবর্তনের ফলে এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এলাকার কৃষি, যোগাযোগ, মৎস্য, অর্থনীতি ও পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর। হাওর অঞ্চলে নদ-নদী রক্ষা করা ও উন্নয়ন করতে চাই হাওর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এতে সঠিকভাবে গবেষণা করে টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প গ্ৰহণ ও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত এ বিষয়ে বলেছেন, জেলার হাওর অঞ্চলের নদ -নদীর নাব্যতা সংকট নিরসনে সরকারের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ উপজেলায় নদী খনন কাজ শুরু ও করা হয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি নিয়মিত।

এসএন

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

পোস্টে শফিকুল আলম লিখেছেন, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি লেখেন, জনগণকে শান্ত থাকার এবং অপ্রীতিকর কার্যকলাপে অংশ নেওয়া থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে বন্দর নগরীসহ সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।

যেকোনো মূল্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে ও সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন ড. ইউনূস।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। নিহত আলিফ (৩৫) সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তার অনুসারীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।

আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান, নিহত ছয়