চাকরির কথা বলে অপহরণ
দুর্গাপুরের সেই যুবক ফেনী থেকে উদ্ধার
নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর থেকে অপহৃত যুবক নোমানকে ফেনীর পরশুরাম এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ফেনী জেলার পরশুরাম থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুর্গাপুর থানা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি যৌথ দল বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সীমান্তবর্তী জয়ন্তনগর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে ফেনী থেকে দুর্গাপুর থানায় আনা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান ও ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফরিদ আহমেদ।
এর আগে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের যুবক নোমানকে কাজের দেওয়ার কথা বলে ফেনীতে নিয়ে অপহরণের অভিযোগে একজনকে আটক করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চাকরির নামে যুবককে অপহরণ, দাবি করছে মুক্তিপণ
অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে জানিয়ে নোমানের বাবা গত সোমবার রাতে দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
২১ বছরের নোমানের বাবা পাটলী গ্রামের শুক্কুর আলীর অভিযোগে বলেন, “নোমান গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় রিকশা চালাত। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সে গ্রামের বাড়িতে আসে। ওইদিন বিকালেই প্রতিবেশী বাদশা মিয়া তাকে কাজ দেওয়ার কথা বলে ফেনীতে নিয়ে যায়।”
এর পরদিন নোমান মুঠোফোনে তার ছোট বোন নূরজাহানকে জানায় তাকে অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন ও ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। টাকা না দিলে তাকে খুন করা হবে এমন হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া লাবু মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তি নোমানের বড় ভাই শামীমকে ফোন করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠাতে বলেন। অপহরণকারীরা তাকে গাছের সঙ্গে শিকলে বেঁধে মারধরের ভিডিও ফুটেজ ও ছবিও পাঠায় শামীমের ইমো নম্বরে।
পাটলী গ্রামের বাদশা মিয়া এবং ফেনীর লাবু মিয়া নামের দুই ব্যক্তি এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে দাবি করেন শুক্কুর আলী। নোমানকে ফেনীতে নেওয়ার দু’দিন পর বাদশা মিয়া বাড়িতে চলে আসেন। তার এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুর থানা পুলিশ বাদশা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাকে নিয়ে ফেনীর পরশুরামে উদ্ধার অভিযানে যান দুর্গাপুর থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল।
তারা বুধবার রাতে জয়ন্তনগর এলাকা থেকে নোমানকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাকে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ দিকে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরণ চক্রের সদস্যরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকে বলে জানান উদ্ধার দলের সদস্যরা। উদ্ধার করা নোমান এবং আটক বাদশা মিয়া এখন দুর্গাপুর থানায় হেফাজতে আছেন।
নেত্রকোনা ডিবি পুলিশের এসআই ফরিদ আহমেদ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে, নোমান ও অপহরণের ঘটনায় জড়িত বাদশা এবং লাবুসহ চক্রটির প্রত্যেকে মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত।”
দুর্গাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, “নোমানকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
এমএসপি