ভর্তি ফি পরিশোধে শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা!
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে কলেজগুলোতে ভর্তি ফি পরিশোধে মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। শিওর ক্যাশের এজেন্টরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০-১০০ টাকা বাড়তি নিচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তবে শিওর ক্যাশের এজেন্টরা জানিয়েছেন, ‘শুধুমাত্র কলেজে ভর্তিতে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে লেনদেন হয় এবং অগ্রীম টাকা দিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে টাকা নিতে হয়।’
জানা গেছে, উপজেলার ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ ও অলোয়া মনিরুজ্জামান বিএম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের রূপালী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা শিক্ষায় ভর্তিতে কলেজের নির্ধারিত টাকার চেয়ে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীদের।
আরো জানা গেছে, শিক্ষার্থী প্রতি ৫০-১০০ টাকা করে বেশি নিচ্ছে শিওর ক্যাশের এজেন্টারা। এতে কলেজ কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া শিওর ক্যাশ ব্যতিত টাকা পরিশোধের অন্য কোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পরিশোধের নিয়ম না থাকায় এই সুযোগ নিচ্ছে ডিলার ও এজেন্ট ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তামান্না জানান, কলেজে ভর্তিতে বেতন, সেশন ও পরীক্ষা ফি বাবদ ২ হাজার ২৭৫ টাকা শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু শিওর ক্যাশের দোকানদারদের (এজেন্ট) দিতে হচ্ছে ২ হাজার ৩৭৫ টাকা করে। ফলে ১০০ টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, উপজেলার অন্যান্য কলেজে টাকা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করা যায়। এতে বাড়তি টাকা দিতে হয় না। আবার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শুধু শিওর ক্যাশ না করে রকেট, বিকাশ, নগদে পরিশোধের ব্যবস্থা রাখলে এজেন্টরা বাড়তি টাকা নেয়ার সুযোগ পেত না।
শিওর ক্যাশের এজেন্টরা জানান, শুধুমাাত্র কলেজে ভর্তিতে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে লেনদেন হয়। এতে অগ্রীম টাকা দিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে টাকা নিতে হয় এজেন্টদের। এতে ডিলাররা এজেন্টদের টাকা দিয়ে ব্যবসা করছে। ডিলাররা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা দিতে ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা বলে বাড়তি টাকা চায়।
তারা আরো জানান, লাখ লাখ টাকা বিনিয়ম করে মোবাইল একাউন্ট রাখতে হয়। কিন্তু ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ফি জমা দেওয়া শেষে এজেন্টের একাউন্টে জমানো টাকা তুলতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে।
তবে এজেন্টদের অভিযোগ অস্বীকার করে ভূঞাপুর শিওর ক্যাশের ডিলার বিপ্লব জানান, কলেজে ভর্তি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নাই। তবে এজেন্টরা যেহেতু লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করছে তাই বাড়তি লাভের জন্য টাকা নিচ্ছে বলে জেনেছি। শিওর ক্যাশের তেমন লেনদেন না হওয়ায় ডিলার এস আর নিয়োগ তেমন করেন না। ফলে এজেন্টের একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণের ব্যালেন্স থাকে না।
বাড়তি টাকার বিষয়টি স্বীকার করে ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ও অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান সরকার বলেন, ’পূর্ব থেকেই কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিওর ক্যাশের একটা চুক্তি হয়েছিল। তবে গ্রামাঞ্চলে শিওর ক্যাশ না থাকা এবং শিক্ষার্থীদের একাউন্ট না থাকায় তারা ভর্তি ফি দিতে পারছে না।
তিনি আরো বলেন, ‘পরবর্তিতে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কলেজের ফি পরিশোধ করতে হবে না। একটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরের বছর থেকে শিক্ষার্থীরা ঝামেলাহীনভাবে ভর্তি ফি ব্যাংকে জমা দিতে পারবে।’
এসআইএইচ