জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন: পাবনার রাজনৈতিক অঙ্গন সরগরম
আর মাত্র তিনদিন পর আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের বৃহত্তম প্রাচীন রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাবনা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ সম্মেলন ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গন। নবীন-প্রবীণ পদপ্রত্যাশীদের পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো শহর।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে।
তবে করোনাকালীন সরকারের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ সম্মেলনকে ঘিরে জনমনে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
যদিও করোনা সংক্রমণের এ সময়ে সম্মেলনের তারিখ ও সময় নিয়ে তেমন মাথা ব্যথা নেই সরকার দলীয় দায়িত্বশীলদের মধ্যে।
পাবনা ঐতিহাসিক পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে (পুলিশ লাইনস মাঠে) সম্মেলনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুল রহমানের উপস্থিত থাকার কথা আছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই উপস্থিত থাকবেন।
কে হবেন দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, এ নিয়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রতিটি স্থানে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এবারের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে যাদের নাম আলোচনায় আছে তারা হলেন- পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, সহ-সভাপতি ও সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাসসুল হক টুকু, সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু এবং দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. ইদ্রিস আলী বিশ্বাস।
এ ছাড়া সভাপতি পদের জন্য আরও যারা আলোচনায় আছেন, তারা হলেন- পাবনা- ঈশ্বরদী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জান বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা তৌফিকুল আলম তৌফিকসহ অনেকে।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন- পাবনা সদর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও বর্তমান জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স, ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ উপকমিটির সদস্য মো. মাজহারুল ইসলাম মানিক এবং কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম, অ্যাডভোকেট বেলায়েত আলী বিল্লু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা সোহেল হাসান শাহীনসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বলেন, “আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে আছি, দলের সব কর্মকাণ্ড পালন করছি। দুঃসময়ে দলের জন্য কাজ করেছি। তিনি আমাকে দায়িত্ব দিলে অবশ্যই আমি পালন করবো।”
পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, “দেশের কল্যাণে, মানুষের প্রয়োজেনেই আমরা রাজনীতি করছি। দেশের উন্নয়ন ও রাজনৈতিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্য সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। সব নেতাকর্মীর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্মেলনে আসার জন্য বলা হয়েছে। আশা করছি, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্মেলনে আসবেন।”
জেলার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, “রাষ্ট্র এবং মানুষের জন্য রাজনীতি করছি আমরা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও শেখ হাসিনার নেত্রীতে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তৃণমূলের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য প্রতিটি জেলায় সম্মেলন শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাবনা জেলার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। করোনা সংক্রমণে আগে যে ভয় ছিল এখন আমরা অনেকাংশে নিরাপদ। সংক্রমণকে ভয় না পেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।”
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের ১৩ মাস পর ৯৩ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এর মধ্যে ২৫ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ আছে। জনসংখ্যার বিবেচনায় এবারের জেলা কমিটির অকৃতি বাড়ানোসহ দলের সংগঠকদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠন করা হবে বলে প্রত্যাশা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।
এমএসপি