১০ বছরেও সংস্কার হয়নি বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানের
প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে একবারও সংস্কার হয়নি বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের। ময়লা-আবর্জনা ও খানাখন্দে ভর্তি উদ্যানটি।
বঙ্গবন্ধু যে মাটিতে ভাষণ দিয়েছিলেন সেই মাটি সরক্ষণ করা হলেও সেটি এখন খানা-খন্দে ভরা। মাটির চারপাশ সৌন্দর্যবর্ধন করা হলেও ভেতরের অংশ সম্পূর্ণ অহেলিত। এ মাঠে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। মাটির ভেতরের অংশে একটি হেলিপ্যাড সেটিও রয়েছে অযত্নে। নগরীর মানুষের প্রধান বিনোদন কেন্দ্রস্থল হলেও গত ১০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
উদ্যানটির দৈর্ঘ্য ৫৫০ ফুট ও প্রস্থ ৪৫০ ফুট। উদ্যানের চারপাশ জুড়ে একটি হাঁটার পথ রয়েছে যার অনেক অংশ ভাঙা। উদ্যানের ভেতরে বসার জন্য বেঞ্চগুলো নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাটু সমান পানি জমে পুরো মাঠ তলিয়ে যায়। মাঠ জুড়ে বড় বড় গর্ত। মাটি সমান না হওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় খেলতে আসা শিশু-কিশোর-তরুণদের।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার এ উদ্যানের নামকরণ করে ‘বঙ্গবন্ধু উদ্যান’। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে ভাষণ দিয়েছেন, তার আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে এখানে একটি মুক্ত মঞ্চ ও ম্যুরাল তৈরি করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে আলোকসজ্জা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়।
উদ্যানটি কয়েক দশক ধরে বরিশাল শহরের প্রধান খেলার মাঠ ছিল। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, বৃক্ষমেলা, বাণিজ্যমেলা, কুচকাওয়াজসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদ্যানে নিয়মিত ক্রিকেট খেলতে আসেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, মাঠ জুড়ে গর্ত হয়ে আছে। এত বর্ড় গর্ত যার ভেতর পা ঢুকে যায়। আমরা যারা মাঠে খেলাধুলা করি তাদের বিপদের শেষ নেই। সম্পূর্ণ মাঠ ময়লা-আবর্জনায় ঢেকে আছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে এমন পরিবেশ হয়েছে আছে।
ঘুরতে আসাা মাহবুব আলম বলেন, বাচ্চা নিয়ে মাঠে এসেছি। কিন্তু মাঠে এত অপষ্কিার ও উঁচু-নিচু যার কারণে বাচ্চকে মাঠে ছেড়ে দেওয়া অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
নাগরিক সচেতন কমিটির সভাপতি শাহ্ সাজেদা জানান, ঐতিহ্যবাহী এ বঙ্গবন্ধু উদ্যান বরিশালের গৌরব। এ স্থান সংস্কার করে আরও সৌন্দর্যবর্ধন করা উচিত। বৃষ্টি হলেই মাঠে কাদা-মাটি হয়ে যায়। যার ফলে দর্শনার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই এ স্থানের প্রতি আরও বেশি নজর দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা মো. ফারুখ হোসেন জানান, উদ্যান পর্যবেক্ষণ করে সংস্কার করা হবে। বর্তমানে উদ্যানের যতটুকু সংস্কার কাজ করা প্রয়োজন সে বিষয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
বরিশালের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমূল হুদা জানান, এটি জেলা প্রশাসনের নজরে আছে। শিগগিরই একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে।
এসঅ/এসএন