ফেনীতে হাসপাতালে তালা: উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
ফেনী শহরের সেনসিভ হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন শীলসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হাসপাতালটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নাহার।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি ) ফেনীর সিনিয়র জুড়িয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন তিনি।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলার গুণক গ্রামের আবদুর রবের ছেলে আবদুল আউয়াল সবুজ, ফেনী সদর উপজেলার বারাহিপুর গ্রামের এমরান হোসেনের ছেলে আবির হোসেন, মধ্যম ধলিয়া গ্রামের সামছুল করিম প্রকাশ কালা মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম, ইজ্জতপুর গ্রামের মৌলভী আবদুল আজিজের ছেলে আবদুল আউয়াল, সাড়াশিয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে আজাহার, জালাল আহমেদ বদির ছেলে রাজিব আহমেদ-সহ অজ্ঞাতনামা যুব-ছাত্রলীগের ৫০-৬০ জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদি ফেনী ট্রাংক রোডস্থ সেনসিভ হাসপাতালটি দীর্ঘ দিন ধরে সুনামের সঙ্গে পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট ১, ২ ও ৩নং আসামিসহ অন্য আসামিরা তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। সেই সময় তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন।
পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধে লুৎফুন নাহার সরল বিশ্বাসে মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামিরা সশস্ত্র অবস্থায় হাসপাতালে প্রবেশ করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানকে খুঁজতে থাকে।
কিন্তু তারা চেয়ারম্যানকে না পেয়ে কর্তব্যরত নার্স, চিকিৎসক-সহ কর্মচারীদের হাসপাতাল ত্যাগের নির্দেশ দেন। চিকিৎসক-কর্মচারীরা হাসপাতাল ত্যাগে অনিহা দেখালে তাদের কিল, ঘুসি মেরে আহত এবং নারী নার্সদের কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে শ্লীলতাহানি করে আসামিরা।
এক পর্যায়ে হাসপাতালের পরিচালক ফজলুল হক মুন্নাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটকের তালা নিয়ে যায় তারা। সেসময় কর্মচারীদের সঙ্গে থাকা নগদ প্রায় ৩০ হাজার টাকা, ক্যাশে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং পাঁচটি ব্যাংকের চেকবই ও মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায় আসামিরা।
যাওয়ার সময় দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ না করে তালা খোলার চেষ্টা করলে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও পরিচালককে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন আসামিরা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, হাসপাতালে রক্ষিত প্রায় ১ কোটি টাকার চিকিৎসাসরঞ্জাম চুরি, ল্যাবে রোগীদের স্যাম্পল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে আসামিরা হাসপাতালের সাইনবোর্ডটিও খুলে নিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, মামলার বাদি লুৎফুন নাহার ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিমের স্ত্রী।
এমএসপি