৬ বছর ধরে বন্ধ বিজয়পুর স্থলবন্দর, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও প্রায় ছয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিজয়পুর স্থলবন্দর। এক সময় এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি করা হলেও ২০১৬ সালে ভারতের পরিবেশবাদী সংগঠনের করা মামলায় তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েছেন অর্থ বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা ও শ্রমিকরা।
বন্দরটি বন্ধ হয়ে কোটি কোটি টাকা ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কয়লা ব্যবসায়ীরা এ প্রতিবেদককে এমনটাই জানিয়েছেন। প্রায় ৬ বছর ধরে স্থলবন্দরটি বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে আমদানিকারকদের অফিসের আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি। ওই বন্দরে কর্মরত অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
বিজয়পুর স্থলবন্দরের কয়লা ব্যবসায়ী রহমান তালুকদার বলেন, আমরা সীমান্ত এলাকার ব্যবসায়ী। এক সময় এ বন্দর দিয়ে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হতো। কিন্তু ভারতীয় অংশে উন্মুক্ত কয়লা তোলার বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীরা মামলা করায় তা বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে অতি কষ্টে জীবনযাপন করছি। বন্দরটি পুনরায় চালু হলে দুই দেশই অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করবে।
বিজয়পুরের ব্যবসায়ী ফজলুল হক বলেন,বন্দরটি পুনরায় চালু হলে স্থানীয়ভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানুষের জীবিকায় নতুন সম্ভাবনা যুক্ত হবে। সেই সঙ্গে অল্প সময়ে সারা দেশে কয়লা, পাথরসহ কমপক্ষে ১৮টি পণ্য আমদানি করা সম্ভব হবে।
সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদারের প্রচেষ্টায় দুর্গাপুর এলাকার কয়লা ব্যবসায়ী এবং ওই এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমাসহ ভারতের রপ্তানিকারকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে যাচ্ছেন। এতে নতুন করে বন্দরটি চালুর সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।
বিজয়পুর আমদানি-রপ্তানি বন্দর কমিটির নেতা আফজাল হোসেন বলেছেন, ভারতের করা মামলায় আটকে গেছে কয়লা আমদানি। আমাদের দেশের কম করে হলেও ২৫টি অফিস ও তার আসবাবপত্র নষ্ট হচ্ছে। আমাদের ব্যবসায়ীদের বহু টাকা ভারতে আটকা পড়ে আছে। এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। আমাদের বর্ডার দিয়ে কোনো সমস্যা নেই, আশা করছি এবার চালু হতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, কয়লা আমদানি করতে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই। ভারতের আইনি জটিলতার কারণে তা বন্ধ রয়েছে। এর আগে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই দেশের প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার বলেন, ‘ভারতের পরিবেশবাদীদের করা মামলার বিষয়সহ নানা বিষয়ে ভারতের শিলংয়ে দুই দেশের জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সভা করেছেন। বিজয়পুর সীমান্তের বন্দরটির গুরুত্ব তুলে ধরে ইতোমধ্যে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করেছি। তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বলে আমাদের আশ্বাসও দিয়েছেন। অচিরেই মামলা জটিলতা নিরসন করে পুনরায় বন্দরটি চালু হবে বলে আমি আশাবাদী।’
এসএন