জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে এখনো ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দোসররা বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, "ফ্যাসিবাদী সিস্টেম পাল্টাতে হবে। বাংলাদেশের নেতৃত্ব আগামীতে যার হাতেই যাক না কেন, একটি পরিবর্তিত ব্যবস্থা প্রয়োজন।"
বুধবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে বিএনপির আয়োজিত ইফতার মাহফিলে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইফতার মাহফিলটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপথ নিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, "অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার মতো এবং দেশের মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো রাজনৈতিক দল বা পক্ষ বাংলাদেশে রয়েছে। ৫ আগস্ট যে শক্তিকে বাংলাদেশের মানুষ পরাজিত করেছে, মুজিববাদ ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে, ভবিষ্যতের রাজনীতি ও নির্বাচনে সেই মুজিববাদী রাজনীতির কোনো স্থান হবে না।"
তিনি আরও বলেন, "একটি বিচার প্রক্রিয়া চলমান আছে। সেই বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রশ্নই ওঠে না। আমি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই যেন আমরা এই বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমতে আসতে পারি। আমরা সবসময় এমন এক বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেছি, যেখানে রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকবে, নীতিগত পার্থক্য থাকবে, সমালোচনাও থাকবে। কিন্তু সবাই একসাথে বসে দেশের স্বার্থে আলোচনা করতে পারবে।"
নাহিদ ইসলাম উল্লেখ করেন, "যখন রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বসার মত অবস্থা থাকে না এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভিতরে অনৈক্য সৃষ্টি হয়, তখন অরাজনৈতিক শক্তিগুলো সুযোগের সন্ধানে থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা বিভিন্ন সময়ে এ রকম ঘটনা ঘটতে দেখেছি। আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ঐক্য বজায় রাখা প্রয়োজন।"
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল অব. অলি আহমদ, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ অন্যান্য নেতা। দোয়া পরিচালনা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওরার্কার্স পার্টির সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী এবং অন্যান্য নেতারা।
বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কবির রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ড. মাহদী আমিন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা।