বাণিজ্যিকভাবে ‘যমুনা রেল সেতুতে’ ট্রেন চলাচল শুরু, স্বপ্নপূরণ উত্তরাঞ্চলবাসীর!
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে নব-নির্মিত যমুনা রেলওয়ে সেতু দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল যাত্রা শুরু হয়েছে। এতে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও উত্তরাঞ্চলবাসীর ট্রেনপথে যাতায়াতের নতুন এক স্বপ্নের দুয়ার খুলল। নতুন রেলপথে ট্রেন চালু হওয়ার ফলে রেল সেতুর দুই প্রান্তে ক্রসিংয়ের ভোগান্তি পোঁহাতে হবে না যাত্রীদের।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সিল্কসিটি ট্রেন নব-নির্মিত যমুনা রেল সেতু পারাপারের মধ্য দিয়ে এই নতুন দিগন্তের যাত্রা শুরু হয়। মাত্র ৬ মিনিটে ট্রেনটি সেতুটি পার হয়। এ সময় ট্রেনটির ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। অপরদিকে, সকাল ১০টায় বনলতা এক্সপ্রেস শেষবারের মতো পুরানো বঙ্গবন্ধু সেতু ব্যবহার করে যাত্রা করে, যা সেই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের সমাপ্তি টেনে দেয়।
এরআগে সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটে টাঙ্গাইলের ইব্রাহীমাবাদ রেল স্টেশন পূর্ব প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জ সায়দাবাদ রেল স্টেশনের উদ্দ্যোশে ট্রেনের একটি ইঞ্জিল পরীক্ষামূলকভাবে যমুনা রেল সেতু চালানো হয়। যার ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল ৫০ কিলোমিটার। পুনরায় সায়দাবাদ রেল স্টেশন থেকে সেতু পূর্বের উদ্দ্যোশে রওনা হয়।
যমুনা রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, যমুনা নদীর উপর নব-নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেল সেতুতে ২টি (ডাবল) রেল লাইন থাকলেও প্রথমে একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে। এ জন্য সেতুটির দুই পাড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আগামী ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ওই দিন থেকে ২ লাইনেই ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
মাসউদুর রহমান জানান আরও জানান, উদ্বোধনের দিন যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ওই অনুষ্ঠানে থাকবেন। ওই দিন থেকে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে এবং বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে আর কোনো ট্রেন চলাচল করবে না। জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে জাপানি সংস্থা জায়কা। নতুন সেতুর ফলে ট্রেন পারাপারে সময় বাঁচবে ৩০-৩৫ মিনিট।
![](https://admin.dhakaprokash24.com/media/content/images/2025February/dhaka-prokah-news-9-20250212182624.jpg)
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এর মেয়াদ কয়েক দফায় ২ বছর বাড়ানোর ফলে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছেন। যৌথ অর্থায়নে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করা হয়।
১৯৯৮ সালে ২৩ জুন টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। পরে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়।
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)