১৪ আদিবাসী জুম্ম জাতি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে : সন্তু লারমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। ছবিঃ সংগৃহীত
দেশের পার্বত্য অঞ্চলের ১৩টি ভাষাভাষীর ১৪ জুম্ম জাতি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে রয়েছে বলে দাবি করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যেতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। এ পরিস্থিতিকে ‘অস্বাভাবিক’ ও ‘ভয়াবহ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রাঙামাটি শহরের নিউমার্কেট এলাকায় আশিকা কনভেনশন হলে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোকে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ প্রসঙ্গে সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সন্তু লারমা বলেন, “পার্বত্য অঞ্চলের ১৩টি ভাষাভাষীর ১৪টি আদিবাসী জুম্ম জাতি আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পার্বত্য অঞ্চলে একটা নিরাপত্তাহীন, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে জুম্ম জনগণ বেঁচে আছে। নানাভাবে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলো আদায়ের জন্য আন্দোলন করে চলেছে।
“পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন ও অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনের কোনও বিকল্প নেই।”
‘পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোকে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সুধী সমাবেশ ও মতবিনিময়ের আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল শাখা।
সভায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ও জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এস মং, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম বান্দরবান জেলা শাখার প্রতিনিধি অংচ মং মারমা, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার প্রতিনিধি নমিতা চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাংগঠনিক সম্পাদক থোয়াই অং মারমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক লেলুং খুমি, তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠী থেকে অ্যাডভোকেট দীননাথ তঞ্চঙ্গ্যা, গুর্খা জাতিগোষ্ঠী থেকে মনোজ বাহাদুর গুর্খা, সাওঁতাল জাতিগোষ্ঠী থেকে মনু মুরমু সাঁওতাল, অহমিয়া জাতিগোষ্ঠী থেকে অনুপ কুমার আসামসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত কোনও আদিবাসীদের নিয়ে ভাবেনি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ভাবছে না বলে অভিযোগ তাদের।
সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে উল্লেখ করে এক বক্তা বলেন, “সেখানেও আমাদের কী পরিচয় হবে, সেটি নির্ধারণ করা হয়নি। পাঠ্যবই থেকে ভুঁইফোড় সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বই থেকে আদিবাসী শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ করায় উল্টো পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা চালানো হয়। কিন্তু এই সরকার এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো রাখেনি।”