কুষ্টিয়ায় একই জমি বারবার বিক্রি, দখল নিতে গেলে হামলা!
কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস ইন্দ্রা মোড় এলাকার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে মকবুল হোসেন ওরফে মোগল (৬০) এর বিরুদ্ধে একই জমি বারবার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
এ ছাড়া জমি বিক্রির পরও দখল না দিয়ে পুনরায় বিক্রি এবং হুমকি-ধামকি দেওয়ারও অভিযোগ আছে।
মকবুল হোসেন ও তার ছেলে সন্ত্রাসী কায়দায় অপকর্ম করেও রক্ষা পেতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নাম ভাঙিয়ে আসছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস মৌজার ১৭১৬ নং এসএ দাগের সম্পত্তি মকবুল হোসেনের বাবা মোয়াজ্জেম হোসেন মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিশ হিসেবে মকবুল হোসেনসহ তার পাঁচ ভাই সম্পত্তির মালিক হন।
পরে মকবুল হোসেন তার ভাগের সম্পত্তি নাম খারিজ করে নেন। যার এসএ দাগ নং ৩২, আর, এস দাগ নং ২২। জমির পরিমান ০.০৪১২৫০ একর। পরে মকবুল হোসেন ১৯৯১ সালে হাবিবুন নাহার নামে এক নারীর কাছে জমিটি বিক্রি করে দেন। বিক্রি করলেও জমি দখল না দেওয়ার কারণে ২০০২ সালে পুনরায় মকবুল জোর করে জমিটি ক্রয় করে নেয়। পরে মকবুল হোসেন ২০০৩ সালে শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে আবারও জমি বিক্রি করেন।
ক্রয়কৃত সম্পত্তি শহিদুল ইসলাম দখল না পেয়ে ২০১১ সালে গোলাম সরোয়ার নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। তারপর থেকে মকবুল হোসেন গোলাম সারোয়ারের জমি দখল করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেন। উপায় না পেয়ে গোলাম সরোয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের দুধকুমড়া এলাকার জামাল উদ্দিন বিশ্বাসের স্ত্রী শাকিরন নেছার কাছে বিক্রি করে দেন।
জামালের স্ত্রী সম্পত্তি কেনার পর থেকেই মকবুল হোসেন বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানি করে আসছিলেন।
গত ২০ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জামাল তার স্ত্রীর ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে বাড়ি করার প্রস্তুতি নিলে মকবুল হোসেন তার স্ত্রী রাশেদা খাতুন (৫৫) ও ছেলে মেহেদী হাসান তপু (২৭) তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করে। পরে জামালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার চালায়।
তারা দাবি করে জামাল জোর করে তাদের জমির প্রাচীর ভেঙে রাস্তা করেছে।
জানা গেছে, প্রায় ৮ বছর আগে ওই রাস্তাটি নির্মাণ করেছিল কুষ্টিয়া পৌরসভা। জামালকে নৃশংসভাবে কোপানোর ঘটনায় তার বড়ভাই জাফর বিশ্বাস বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নং-২৪।
এদিকে, মামলা থেকে রক্ষা পাবার জন্য মকবুল হোসেন মোগল ও তার পরিবার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার দাবি করে জামালের বিরুদ্ধে রাস্তা নিয়ে মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে।
আহত জামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, 'আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে আগে থেকে রাস্তা করা ছিল। আমার বিরুদ্ধে রাস্তা নিয়ে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে। মকবুল ও তার পরিবার আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে আমাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে মারাত্মক জখম করেছে।’
আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আবারও কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।'
মকবুলের ভাস্তে বিপুল হোসেন বলেন, 'এখানে আগে থেকেই রাস্তা ছিল। নতুন করে এখানে কোনো রাস্তা হয়নি। এটা আমাদের সবার চলাচলের রাস্তা হিসেবেই ছিল।'
পৌরসভার ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর রেজাউল ইসলাম বাবু বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা আছে। কয়েকবার জমিটি বিক্রয় হলেও কেউ দখলে নিতে পারেনি। সর্বশেষ ব্যক্তি দখল নিতে গেলে তাকে ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়।'
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম জানান, এ ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএ/এমএসপি