৭ম ধাপের ইউপি নির্বাচন
কুমিল্লায় বিদ্রোহীদের জয়জয়কার
কুমিল্লায় সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের জয়জয়কার।
গতকাল সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লার দুইটি উপজেলার ২৩টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেবিদ্বার উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৯টিতেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী। বাকি চারটিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থীরা। রাত ১১টায় বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক উন নবী তালুকদারসহ সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তারা।
দেবিদ্বার উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ। এর মধ্যে ২টি ইউপিতে ইভিএমে এবং ১২টি ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়।
চারটি ইউপিতে নৌকার বিজয়ীরা হলেন, গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নে মোহাম্মদ মোকবল হোসেন মুকুল (নৌকা), গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নে মো. হুমায়ুন কবির (নৌকা), সুলতানপুর ইউনিয়নে অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির (নৌকা), বরকামতা ইউনিয়নে আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম (নৌকা)।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন, বড়শালঘর ইউপিতে আবদুল আউয়াল (আনারস), রসুলপুর ইউপিতে মো. শাহজাহান (ঘোড়া), সুবিল ইউপিতে গোলাম সারোয়ার মুকুল ভূইয়া (চশমা), ফতেহাবাদ ইউপিতে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান মাসুদ (দোয়াত কলম), এলাহাবাদ ইউপিতে মো. নুরুল আমীন (চশমা), জাফরগঞ্জ ইউপিতে মো. জাহিদুল আলম (আনারস) রাজামেহার ইউপিতে মো. জসিম উদ্দিন সরকার (চশমা), ধামতী ইউপিতে মো. মহিউদ্দিন মিঠু (আনারস), মোহনপুর ইউপিতে মো. ময়নাল হোসেন (মোটরসাইকেল) ও ইউছুফপুর ইউপিতে (স্বতন্ত্র) মো. জাকারিয়া (আনারস)।
উল্লেখ্য, উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে সোমবার ১৪টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। একটি ইউনিয়নে নৌকা মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া মুকুল মারা যাওয়ায় ওই ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ১৪টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা প্রতীক), জাতীয় পার্টি মনোনীত (লাঙ্গল প্রতীক), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্রসহ মোট ১০৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অপরদিকে বুড়িচং উপজেলার ৯ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিতে জয় পেয়েছে নৌকার প্রার্থীরা। বাকি ৬টিতেই বিজয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সোমবার রাতে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে তাদের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কর্মকর্তা।
বুড়িচংয়ে বেসরকারিভাবে যারা জয়ী হয়েছেন- ১নং রাজাপুর ইউনিয়নে কাসেম মাস্টার (ঘোড়া), ২নং বাকশীমূলে আবদুল করিম (নৌকা), ৩নং বুড়িচং সদর ইউনিয়নে জয়নাল আবেদীন (নৌকা), ৪নং ষোলনল ইউনিয়নে হাজী বিল্লাল (আনারস), ৫নং পীরযাত্রাপুরে আলহাজ্ব মো. আবু তাহের (আনারস), ৬নং ময়নামতি ইউনিয়নে মো. লালন হায়দার (নৌকা), ৭নং মোকাম ইউনিয়নে মো. সাহেব আলী (চশমা), ৮নং ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নে ইস্কান্দর আলী ভুইয়া (আনারস), ৯নং ভারেল্লা দক্ষিণে মো. ওমর ফারুক (ঘোড়া)।
ভোটের দিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বুড়িচংয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় সুশৃঙ্খলভাবেই ভোট গ্রহণ করা হয়। কোনো কেন্দ্রে বা কেন্দ্রের বাইরে মারামারি কিংবা সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটলেও বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বেশ কয়েকজন জাল ভোটার আটক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।