বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবি: ১১ ট্রলারসহ ১৪৪ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে ঝড়ে ট্রলারডুবির ঘটনার একদিন পর ১১ ট্রলারসহ ১৪৪ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি ও সুন্দরবনের দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সমন্বয়ে উদ্ধার হয়েছে।
রবিবার বিকালে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে সুন্দর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ের কবলে ৩২টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। ট্রলারে থাকা অধিকাংশ জেলেরাই সাঁতরে নিরাপদ স্থানে আসে। তারপরও বেশকিছু জেলে নিখোঁজ হন।
শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে জেলে, বনবিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। পরে ওইদিন সন্ধ্যার দিকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড।
নিহত মামুন শেখের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার এবং ইসমাইল শেখের বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া। মামুন শেখ এফবি মা-বাবার দোয়া ট্রলারে এবং ইসমাইল শেখ এফবি জামিলা নামক ট্রলারে ছিল। উদ্ধারকৃত নিহত ওই দুইজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনার পর বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি ও দুবলার চর ফিসারম্যান গ্রুপের সমন্বয়ে প্রায় শতাধিক ট্রলার উদ্ধারের জন্য সাগরে রয়েছে। এখনো অনেক জেলে ও ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার লুৎফর রহমান জানান, ট্রলার ডুবির ঘটনার পর থেকে কোস্টগার্ড, বন বিভাগ ও জেলেরা দুর্ঘটনায় কবলিত ট্রলার থেকে শতাধিক জেলেকে উদ্ধার করেছে। এছাড়া নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে কোস্টগার্ডের দুটি জাহাজ, দুবলার ফিসারম্যান গ্রুপসহ বনবিভাগের সদস্যরা ডুবে যাওয়া ট্রলারের জেলেদের সন্ধানে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।
বাংলাদেশ ফিসিং বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা চৌধুরি জানান, ঝড়ের কবলে মোট ৩২টি ট্রলার ডুবির খবর পেয়েছি। এর মধ্যে ১২টি বরগুনার বাকি ২০টি বাগেরহাট ও পিরোজপুর এলাকার।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুজনের মরদেহ ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত মোট ১৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজদের সন্ধানে কোস্টগার্ড, বনবিভাগ ও ট্রলার মালিক সমিতি যৌথ অভিযান চালাচ্ছে বলেন তিনি।
মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার লুৎফর রহমান জানান, বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে শনিবার দিনব্যাপী কোস্টগার্ড উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রবিবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের ন্যায় উদ্ধার অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, বৈরী আবহাওয়ায় সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় ৩২ ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চর থেকে ২৫ নটিক্যাল মাইল গভীর সাগরে ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে’ ও সুন্দরবনের দুবলায় শুটকির জন্য মাছ আহরণে থাকা এসব ফিশিং ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখনও অনেক জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে ফিরে আসা জেলেরা দাবি করছেন।
এমএ/এমএসপি