ফুফুর জমি দখল করে সেনা সদস্যের ঘর নির্মাণ, প্রতিবাদ করায় হামলা
লালমনিরহাটে এক সেনা সদস্য নিজের ফুফুর ঘর ভেঙে জমি দখল এবং ফুফুকে মেরে হাত-পা ভেঙে দিয়েছেন।
রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফুফু সুফিয়া বেওয়া বাদি হয়ে ভাতিজার হাবিবুর রহমানসহ ৪ জনকে আসামি করে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের তেলীপাড়া (ভাটাপাড়া) এলাকার মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি যশোর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত।
অভিযোগে জানা যায়, সুফিয়া বেওয়া কুড়িগ্রামে তার মেয়ে মেয়ের বাড়ি যান। এ সুযোগে সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান ফুফুর টিনের ঘর ভেঙে, জমি দখল করে সেখানে নিজে দালান-ঘর নির্মাণ করেন।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সুফিয়া বেওয়া বাড়িতে ফিরে দেখেন- তার ঘরও নেই, জমিও নেই। পরে তার বাড়ির পাশেই একটু ফাঁকা জায়গায় একটি চালাঘর বানিয়ে সেখানে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু থাকার জায়গা হলেও সেখানে টয়লেট ও টিউবয়েলের ব্যবস্থা ছিল না। এজন্য সুফিয়া বেওয়াকে অন্যের বাড়িতে গিয়ে টয়লেট ও গোসল করতে হতো। এ সমস্যার কথাটি ভাতিজা হাবিবুরকে বললে তিনি রেগে গিয়ে তার ফুফুকে বেদম মারধর করেন। এ সময় হাবিবুরের স্ত্রী ও মা এসেও তাকে মারপিট করেন এবং হাত-পা ভেঙে দেন।
পরে প্রতিবেশিরা গিয়ে সুফিয়া বেওয়াকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সুফিয়া বেওয়া বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় সুফিয়া বেওয়া বাদী হয়ে রবিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভাতিজা হাবিবুর রহমানসহ ৪ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন।
এ প্রসঙ্গে সুফিয়া বেওয়া কান্না জড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে সন্তানকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করলাম, সেই ছেলেই আমার জমি দখল করলো, দালান-ঘর নির্মাণ করলো। আজ আমি তাকে শুধু একটা টয়লেটের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলতেই সে আমাকে মারলো। থানায় অভিযোগ দিয়েছি, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
অভিযুক্ত সেনা সদস্য হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ফুফুর ঘর ভেঙে আমি দালান ঘর নির্মাণ করেছি ঠিকই কিন্তু তার থাকার জন্য ঘরও তৈরি করে দিয়েছি। শুধু টয়লেট ও টিউবয়েল দেওয়া হয়নি। এ জন্য তিনি প্রতিদিনই গালি-গালাজ করেন। তাই একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।’
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম জানান, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেড/এমএসপি