মা-বাবা-ভাইয়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবিতে নিহত তোফাজ্জল
বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবিতে নিহত তোফাজ্জল। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে গণপিটুনিতে হত্যার শিকার মাসুদ কামাল তোফাজ্জলের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। পরে বরগুনার পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে তার মা-বাবা আর ভাইয়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে তার নানাবাড়ি উপজেলার শতকর এলাকায় প্রথম জানাজা ও তালুকের চরদুয়ানি তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ সমাহিত করা হয়। পরে সকাল ৯টার দিকে তাকে দাফন শেষে চরদোয়ানি বাজারের প্রধান সড়কে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। এ সময় শোকে কাতর এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
নিহত তোফাজ্জল হোসেন পাথরঘাটার তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় এবং মা ও ভাই ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার পরিবারের কোনো সদস্য জীবিত নেই। এ কারণে তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
তোফাজ্জলের স্কুলশিক্ষক মিলন মিয়া জানান, স্কুল জীবন থেকেই তোফাজ্জল খুব মেধাবী এবং শান্ত স্বভাবের লোক ছিল। ও সবসময় শিক্ষক এবং বড়দের সম্মান করতো। আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই এবং তার সঙ্গে যারা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন করেছেন তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে তার মামাতো বোন তানিয়া জানান, আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করে দোষ এড়ানোর জন্য মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে আটক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। পরে কয়েক দফায় মারধর করা রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় ঢাবির ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। তারা হলেন- ওয়াজিবুল আলম, মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ ও আহসানউল্লাহ। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া উইং থেকে এই তথ্য জানানো হয়।