সাবেক প্রতিমন্ত্রী-বর্তমান এমপি গ্রুপের কোন্দল, উত্তেজনা চরমে
সাবেক প্রতিমন্ত্রী-বর্তমান এমপি গ্রুপের কোন্দল, উত্তেজনা চরমে। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও বর্তমান সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসানের গ্রুপের মধ্যে কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকে দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। অবস্থান নেন উপজেলা শহরের আলাদা আলাদা জায়গায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়ন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। মাঠে ছিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জায়গা দখল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড টানিয়ে দখল বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ ও বর্তমান সংসদ সদস্যের সমর্থকরা।
এরই প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ সময় তিনি বর্তমান সংসদ সদস্যের নাম উচ্চারণ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো বর্তমান এমপি বিপ্লব হাসান পলাশ নেপথ্যে থেকে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন। আমাকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনাও করছেন তিনি। ’ সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে, সামাজিকভাবেও। এখন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতে চায়।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমএ মোমেন, সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ খোকা, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নুরুল আমিন, শৌলমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেন উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমসহ উপজেলা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশ কর্মী সমর্থক। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সাবেক ওই প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরা। এসময় পুলিশি বাঁধার মুখে পড়েন তাঁরা।
এদিকে কমিটি বিলুপ্ত চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ ও বর্তমান সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসানের সমর্থকরা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল ইসলাম মিনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদ শাহনেওয়াজ তুহিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রমুখ। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। অবস্থান নেন মুখোমুখি।
তবে সাবেক প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে বর্তমান সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কল রিসিভ করেননি।
কথা হয় রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ হাসান খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে সজাগ ছিল প্রশাসন।’
সহকারী পুলিশ সুপার (রৌমারী-রাজিবপুর সার্কেল) মমিনুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল বলে দাবি করেন তিনি।