‘পুলিশের চাকরিকে ইবাদত মনে করি, এ কাজের মাধ্যমে জান্নাতে যেতে চাই’
যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলম। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের চাকরিকে ‘ইবাদত’ মনে করেন যশোরের নবাগত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলম। তিনি বলেছেন, ‘এই চাকরিকে রুটি-রুজির পাশাপাশি আমার ইবাদত মনে করি। এই কাজের মাধ্যমে আমি জান্নাতে যেতে চাই।’
বুধবার (১০ জুলাই) বিকালে যশোর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই কথা বলেন।
পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে সন্ত্রাসীদের যে তালিকা আসবে, আমরা সেই তালিকা অনুযায়ী যাচাই-বাছাই করে কাজ করবো। সন্ত্রাসীদের কার রং কালো, কার রং সাদা সেটি বিবেচ্য হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা হলেন সমাজের আয়না। পুলিশ ও সাংবাদিক একে অপরের সহায়ক। আমরা যশোরকে শান্তি ও স্বস্তির জেলায় পরিণত করতে পারি, যদি আপনারা আমাদের সহায়তা করেন। সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেলে যশোরকে মাদক, সন্ত্রাস আর কিশোর গ্যাংমুক্ত করা সম্ভব।’
পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম গত ৮ জুলাই যশোরে যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি মাদারীপুরে দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে গত সোমবার (৮ জুলাই) পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলম যশোরে যোগদান করেন। পরদিন মঙ্গলবার ভোরে নিজে বাইসাইকেল চালিয়ে জেলা প্রশাসকের বাংলোয় যান। ওখানকার গার্ড তাকে জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ঢুকতে দেননি। পরে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন জেল রোড ট্রাফিক অফিসে। এখানে ফটকে কাউকে না পেয়ে তিনি চলে যান চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে পুলিশ ফাঁড়ির গেট দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে গেট ঝাকাঝাকি করেন। কিন্তু কেউ গেট খুলতে আসেননি।
এরপর তিনি যান কোতোয়ালি মডেল থানায়। সেখানে তিনি পরিচয় গোপন রেখে কোতোয়ালি মডেল থানায় ডিউটি অফিসারের কক্ষে যান। মোবাইল হারিয়ে গেছে জানিয়ে ডিউটি অফিসারের কাছে জিডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে ডিউটি অফিসার একজনকে দেখিয়ে দিয়ে বলেন, জিডি করতে হলে ৫০০ টাকা লাগবে। টাকা না দেওয়ায় তিনি জিডি করতে পারেননি।
পরে তিনি মোটরসাইকেলে চলে যান পুলিশ লাইনে। গেটে কর্মরত কনস্টেবল তাকে দাঁড় করান এবং ব্যারাকে কার সাথে দেখা করবেন তা জানতে চান। তখন ছদ্মবেশী পুলিশ সুপার ওই কনস্টেবলকে বলেন, ব্যারাকে কামাল নামে এক বন্ধু আছে। তার সাথে দেখা করতে চাই। তখন কনস্টেবল গার্ড তাকে ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেন। কনস্টেবলদের ব্যারাকের তিনতলায় গিয়ে তিনি সবার সাথে খিচুড়ি খান এবং অনেকের সাথে আলাপ করেন।
বুধবার বিকেলে যশোর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এই ছদ্মবেশি অভিযানের বিষয়টিও উঠে আসে। অভিযানের বিষয়টি স্বীকারও করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাবেক সভাপতি একরাম- উদ- দ্দৌলা, জেলা সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান, মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার নূর ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আকরামুজ্জামান ও এসএম ফরহাদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মনোতোষ বসু ও এইচ আর তুহিন, ডিবিসি টিভির স্টাফ রিপোর্টার সাকিরুল কবীর রিটন, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল মৃধা, বাংলা ট্রিবিউনের তৌহিদ জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।