ঘোড়াঘাটে ভূমি দখলকারীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি
ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মহাসড়ক সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও কেসি পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মান এবং খাবার হোটেলের ময়লা পানিতে খেলার মাঠ নর্দমায় পরিণত হওয়াকে কেন্দ্রে করে সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার (১৫ জুন) সকালে দৈনিক আমার সংবাদের ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রতিনিধি ঘোড়াঘাট থানায় নিজের নিরাপত্তার চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। যার জিডি নং-৬৪২, তারিখ-১৬/০৬/২৪ইং। এর আগে গত ১০ জুন ‘ফুটবল খেলার মাঠ গিলে খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা, খেলার অনুপযুক্ত হয়ে উঠছে মাঠ’ শিরোনামে দৈনিক আমার সংবাদের অনলাইন সহ স্থানীয় দৈনিক এবং বেশ কিছু নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল সংবাদ প্রচার করা হয়।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় সাংবাদিক লোটাস আহম্মেদ পৌর এলাকার বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ঢাকা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে খাবার কিনতে যায়। তখন ওই হোটেল মালিক মোন্তাজ আলীর ছেলে সজিব মাহমুদ (২৪) ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং বলে “আমরা জায়গা দখল করে ব্যবসা করে খাচ্ছি তাতে তোর সমস্যা কি। কোন মাইকেলের সাহস নাই এখান থেকে আমাদের হোটেল উঠিয়ে দেওয়ার। কত জনকে মাইরা রাস্তায় ফেলায় দিচ্ছি। আর দু‘একজনকে মারলে কিছুই হবে না।”
এর এক পর্যায়ে ভূমিদখলকারী ও সন্ত্রাসী সজিব মাহমুদ ওই সাংবাদিককে একা পেলে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়া সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়াও সন্ত্রাসী সজিব মাহমুদ হুমকি প্রদানের পর থেকে ওই সাংবাদিককে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও সম্মানহানিকর পোস্ট করতে থাকে।
হুমকি প্রদানকারী সজিব মাহমুদ ঘোড়াঘাট পৌরসভার নয়াপাড়া (বাস¯ট্যান্ড) গ্রামের মোন্তাজ আলীর ছেলে। সে পেশায় একজন ছাত্র।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সজিবের বাবা মোন্তাজ আলী ইতিপূর্বে ফেন্সিডিল সহ অন্যান্য মাদকের জমজমাট ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ঘোড়াঘাট সহ আশপাশের এলাকার ফেন্সিডিল ডিলার ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে এবং মাদকের মামলায় আদালত কতৃক সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় কারাবরণ করেছেন। অপর দিকে সজিব মাহমুদ বগুড়া শহরে পড়াশুনা করার সুবাদে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত আছে বলে জানান তার কয়েকজন স্থানীয় বন্ধু। সজিবের বাবা মোন্তাজ আলীও ঘোড়াঘাট পৌর বিএনপির কর্মী।
ভূক্তভোগী সাংবাদিক লোটাস আহম্মেদ বলেন, আমি আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত। হুমকি প্রদানকারী সজিবের পরিবার ইতিপূর্বে মাদকের ব্যবসায় জড়িত থাকায় তাদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে গোপন সখ্যতা আছে। সে নিজে কিংবা সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে আমাকে মারপিট ও হত্যার চেষ্টা করতে পারে।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সংবাদ প্রচার ও প্রকাশকে কেন্দ্র করে কোন সাংবাদিকের দিকে কেও চোখ তুলে তাকালে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান সংক্রান্তে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।