ব্লগার আরএস ফাহিমের শুটিংয়ে দুর্ঘটনা, ভিডিওগ্রাফারের মৃত্যু
আরএস ফাহিম এবং নিহত রবিউল আজিম তনু। ছবি: সংগৃহীত
আরএস ফাহিমের ‘ব্লগ’ তৈরি করতে গাড়ির সানরুফ খুলে শুট করছিলেন ভিডিওগ্রাফার রবিউল আজিম তনু (২২)। শনিবার (৮ জুন) ভোরে গাড়িটি চলছিল সিরাজগঞ্জ শহরের ইলিয়ট ব্রিজে। হঠাৎ ব্রিজের উপরের লোহার পাইপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে রবিউলের এতে গুরুতর আহত হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রবিউল সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার গোপীনাথপুর গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ফিল্ম অ্যাণ্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি ব্লগার আর এস ফাহিমরের ভিডিও গ্রাফারের কাজ করতেন।
এই দুর্ঘটনায় বর্ণনা দিয়ে আরএস ফাহিম আর ভেরিফায়েড ফেইসবুস পেইজে লেখেন,
'আজ রোজ ০৮.০৬.২০২৪ ভোর ৫:৩০মিনিটের দিকে আমাদের আজিম দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছে ।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
কিভাবে বর্ণনা করবো কিছুই বুঝতে পারতেছি না। বার বার মনে হচ্ছে সব কিছু কেমন জানি একটি দুঃসপ্ন এর মতো। কিন্তু কিভাবে নিজেকে বুঝাবো যে ভাইটি আর নেই । চোখের সামনে সব দেখেছি ভাই যা কোনোদিন ও বুঝাতে পারবো না তাই সংক্ষেপে একটু বর্ণনা করি আমরা ঠিক ফজর এর আজান এর সময় সিরাজগঞ্জ কড্ডার মোর এ পৌছাই ,সেখান থেকে হালকা কিছু খাবার খাই সবাই মিলে, এরপর আমরা ক্রস বাঁধ ৩ এ যাই সেখান এ আজিম তার মতো করে শুট নিতে ব্যস্ত ছিলো ভ্লগ এর জন্য তারপর কিছু সময় কাটাই সেখানে এর পর আমরা রওনা হই হোটেল এ যাওয়ার উদ্দেশে।
যাওয়ার পথে সে সামনের একটি গাড়ি তে উঠে Sunroof দিয়ে বের হয়ে শুট নিচ্ছিলো এর মধ্যে এসএস রোড দিয়ে বড়পোল পার হওয়ার সময় উপরে থাকা লোহার যে বার টি রয়েছে (Hieght বার ) বলা হয় যাকে sunroof এ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে মাথায় এবং বুকে সজোরে আঘাত হানে। উল্টো হয়ে ফিরে থাকার কারণে সে ও বুঝতে পারে নি যার কারণে আঘাত টা সরাসরি তার মাথার পিছন দিকে লাগে।
মাথার পিছে আঘাত লাগার ফলে তৎক্ষণাৎ সে সেখানে গাড়ির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পরে। তৎক্ষণাৎ ২-৩মিনিট এর মধ্যে আমরা সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল পৌঁছাই সেখান এ নেওয়ার আগেই আমাদের ভাই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছে । তার জন্য কিছু করার সুযোগ টা ও পায় নাই । চোখের পলকে সব শেষ হয়ে গেলো। চিরদিন দায়ী থেকে যাবো । ২মাস আগে ও বাবা হারা হয়েছে এই ছেলেটির চলে যাওয়া তার মা কে জানানোর মতো কষ্ট কখন ও বুঝতে পারব না।
দূর থেকে অনেকে অনেক মতামত ই করবে কিন্তু সব নিজ চোখের সামনে হয়েছে ১০০০ কথা লিখে ও কাউকে বুঝাতে পারবো না । আমরা সকাল থেকে হাসপাতাল এবং প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম শেষ করে লাশ নিয়ে এখন সাতক্ষিরা এর পথে। সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন এবং ওর আত্মার মাগফেরাত কামনা করবেন।'
এর মধ্যে এসএস রোড দিয়ে বড়পোল পার হওয়ার সময় উপরে থাকা লোহার যে বারটি রয়েছে (Hieght বার ) বলা হয় যাকে সানরুফ এ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে মাথায় এবং বুকে সজোরে আঘাত হানে। উল্টো হয়ে ফিরে থাকার কারণে সে ও বুঝতে পারেনি যার কারণে আঘাতটা সরাসরি তার মাথার পিছন দিকে লাগে। মাথার পিছে আঘাত লাগার ফলে তৎক্ষণাৎ সে সেখানে গাড়ির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পরে। আমরা সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল পৌঁছাই সেখান এ নেওয়ার আগেই আমাদের ভাই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করেছে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জনান, রবিউল হাসান তনু ভোরে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে ইলিয়ট ব্রিজের ওপরে গাড়ির ছাদ খুলে দাঁড়িয়ে ব্রিজের সৌন্দর্যের ভিডিও করছিলেন। হঠাৎ রবিউল ব্রিজের লোহার পাইপের সঙ্গে ধাক্কা খান। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।