স্ত্রীকে এসিডে ঝলসে দেওয়া সাবেক স্বামী গ্রেপ্তার
স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের মামলার একমাত্র আসামি নাঈম মল্লিক (৩০) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব-৪ মানিকগঞ্জ সিপিসি।
গ্রেপ্তারকৃত নাঈম মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা গ্রামের মৃত নিজাম মল্লিকের ছেলে।
প্রসঙ্গত, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার সাথী আক্তার (১৯) নামের এক গার্মেন্টসকর্মীকে রাতের আধারে এসিডে ঝলসে দেয় সাবেক স্বামী নাঈম। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, আড়াই বছর আগে গ্রেপ্তারকৃত নাঈমের সঙ্গে সাথীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সাথী বুঝতে পারে যে, তার স্বামী প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তখন থেকেই সাথী নাঈমকে ভালোভাবে চলাফেরা ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। এসব কথা বলার পর থেকেই সাথীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে নাঈম। এসব ঘটনার পরে উভয় পক্ষের মুরুব্বিরা একাধিক সালিশের মাধ্যমে এ সমস্যার মিমাংসা করে। তারা আবার সংসার শুরু করে। কিছু দিন যাবার পর নাঈম আবার পূর্বের মতো আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে নাঈমকে তালাক নোটিশ দেয় সাথী। নোটিশ পাওয়ার পরই নাঈম ক্ষিপ্ত হয়ে সাথীকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশসহ নানান রকম ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করতে থাকে।
গত ২৯ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে নাঈম সাথীর বাবার বাড়িতে গিয়ে সাথীর শয়ন কক্ষের জানালা দিয়ে এসিড ছুড়ে মারে। নাঈমের ছোড়া অ্যাসিড সাথীর মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান, ছোট বোন ইতি আক্তার ও মা জুলেখা বেগমেরও শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। এ ঘটনার পর নাঈম দৌড়ে পালানোর সময় সাথীর মা জুলেখা বেগম জালানা দিয়ে নাঈমকে দেখে। এ ঘটনায় সাথীর মামা লাল মিয়া সাটুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আরিফ হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে র্যাব আসামি নাঈমকে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। নাঈম ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে সে ছদ্দবেশে দ্রুত স্থান পরিবর্তন করতে থাকে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার সাকরাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় নাঈমকে। জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের কাছে এই এসিড সন্ত্রাসের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে নাঈম।’
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য সাটুরিয়া থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এসএস/এসআইএইচ