গোয়ালে বসবাসকারী সেই বৃদ্ধার ঘর নির্মাণ করে দিল র্যাব
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে গোয়ালঘরে বসবাসকারী বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছে র্যাব-১৩ রংপুর। বাহিনীটির পক্ষ থেকে মহেছেনাকে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, সঙ্গে দিয়েছে শীতবস্ত্রও।
গত শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ঘরের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লে. মাহমুদ বশির আহমেদ।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে র্যাব-১৩ রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লে. মাহমুদ বশির আহমেদ এক প্রেসবার্তায় জানান, স্বামী ছেড়ে গেছেন প্রায় ছয় বছর আগে। এরপর দুই ছেলে নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করছিলেন মহেছেনা। ৫-৬ মাস আগে বড় ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করে চলে যান অন্যত্র। সঙ্গে নিজের করা ঘরটি ভেঙে নিয়ে গেলেও ছেলেকে রেখে যান মা মহেছেনার কাছে। গৃহহীন মহেছেনার আশ্রয় হয় ছোট ছেলের গোয়াল ঘরে গরুর সঙ্গে।
তীব্র শীতেও দশ বছর বয়সী নাতিসহ গরুর সঙ্গে একই ঘরে বসবাস করছিলেন ষাটোর্ধ মহেছেনা। মহেছেনার বাড়িতে গোয়াল ঘরের একদিকে একটি মাচা আর একদিকে শোয়ার বিছানা। মাঝখানের কোণায় গরু রাখার স্থান। গোবর-মূত্রের গন্ধ নিয়ে সেই ঘরেই বসবাস করছেন তিনি। যেন নিজ ভূমিতে পরবাসী মহেছেনা। ছোট ছেলে বাড়িতে থাকলেও স্বল্প আয়ের কারণে মায়ের জন্য আলাদা ঘর তৈরি করে দেওয়ার সামর্থ নেই তার। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গোয়াল ঘরেই আশ্রয় হয়। মহেছেনার ঘটনাটি র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক মহোদয়ের দৃষ্টিগোচর হয়।
মানবিক বিবেচনায় র্যাব-১৩, তথা র্যাব ফোর্সেসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এতে মহেছেনার জীবনের দুর্দশার কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে বলে র্যাব ফোর্সেস কামনা করছে।
মাহমুদ বশির আহমেদ এক প্রেস বার্তায় আরও জানান, ‘ছেলের গোয়ালঘরে বৃদ্ধা মায়ের বসবাস' বিষয়টি একটি সূত্র থেকে আমাদের অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেদৌসের নজরে আসে। পরে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিতে ভুক্তভোগীর বাড়িতে লোক পাঠান। সবকিছু জানার পর বাহিনীর পক্ষ থেকে ওই নারীকে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। আশা করছি, তার কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে। মহেছেনার বাড়িতে ঘর নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন র্যাব-১৩ এর ডিডি মজুন শেখ।
তিনি বলেন, ‘মহেছেনাকে ২২ ফুট দৈর্ঘ ও ১২ ফুট প্রস্থের নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সিমেন্টের খুঁটি ও টিন দিয়ে এ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা তাকে শীতবস্ত্র হিসেবে দুটি কম্বলও দিয়েছি। ঘর আর কম্বল পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন মহেছেনা। তিনি নতুন টিনের ঘর পেয়ে র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সঙ্গে দোয়া করেছেন।’
জিএমএ/এমএসপি