রাজনগর থেকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস না সরাতে মানববন্ধন
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা সদর থেকে রাজনগর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে অন্যত্র স্থানান্তর না করার দাবিতে উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ প্রতিকী ধর্মঘট পালন করেছেন। একইসঙ্গে তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এসব কর্মসূচী পালন করেন রাজনগর সদরের লোকজন।
রাজনগর সদরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, রাজনগর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে আইন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ভবনে শুরু থেকেই সাবরেজিস্ট্রার অফিসের কার্যক্রম চলে আসছিল। কিন্তু মাত্র চার মাস উপজেলা সাব-রেজিস্টার হিসেবে যোগ দেওয়া আজমেরী নির্ঝর রহস্যজনক কারণে উপজেলা সদর থেকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসটি প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের রাজনগর কলেজ মোড়ে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন।
অভিযোগ উঠেছে, নতুন সাব-রেজিস্ট্রার কলেজ মোড় এলাকার কতিপয় লোকের প্ররোচণায় অফিসটি উপজেলা সদর থেকে সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেন। তিনি সেখানে একটি ভাড়া বাড়িও নির্বাচন করেন। অথচ উপজেলা সদরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নিজস্ব ভবন রয়েছে। যেখানে বর্তমানে অফিসের কার্যক্রম চলছে।
উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার আজমেরী নির্ঝরের এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজনগর উপজেলা সদরের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় উপজেলা পরিষদের সামনে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের সামনে মানববন্ধন করেন।
এ সময় রাজনগর বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা একঘন্টা দোকানপাট বন্ধ রেখে প্রতিকী ধর্মঘটও পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়ছল আহমেদ, রাজনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান খয়রুল মজিদ ছালেক, প্রবীন ব্যবসায়ী ছাদিকুর রহমান, ব্যবসায়ী শাহিদুজ্জামান আনসারী মনাই, ইউপি সদস্য দেলওয়ার হোসেন বাবলু, ব্যবসায়ী ফারুক খান, মিজানুর রহমান মিজু, উবায়দুল হক ডিপলু প্রমুখ।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এমনিতেই রাজনগর পিছিয়ে পড়া এক জনপদ। এই সাবরেজিস্ট্রার অফিসকে ঘিরেই রাজনগরের ব্যবসা-বাণিজ্য টিকে আছে। কিন্তু নতুন সাবরেজিস্ট্রার এসে রাজনগরের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করতে তৎপরতা শুরু করেছেন। তিনি উপজেলা সদরকে অন্ধকার করে সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দুরে কলেজ পয়েন্টে ভাড়া বাড়িতে সাবরেজিস্ট্রি অফিস নিয়ে যেতে চান। ব্যবসায়ীরা বলেন, যদি এ অফিস সরে যায় তা হলে রাজনগর উপজেলা সদরের বাজার ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে।
তারা বলেন, বিষয়টি জানার পর সাবরেজিস্ট্রার আজমেরী নির্ঝরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাকে অনুরোধ করেছি অফিস স্থানান্তর না করার জন্য। তিনি যদি জমি চান তাহলে অফিস স্থাপনের জন্য তা দেওয়া হবে। বাড়ি চাইলে এখানে ভাড়া বাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি কোনো কথা শুনছেন না ।
দলিল লেখক হাছান আহমদ বলেন, উপজেলা সদরে অফিস পরিচালনা করার সুবিধা অনেক বেশি। তিনি টুনকু অজুহাতে অফিস সরাতে চান। আমরা মেনে নিতে পারছি না।
এ বিষয়ে জানতে সাবরেজিস্ট্রার আজমেরী নির্ঝরের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এসএমএস করলেও তিনি কোন জবাব দেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সাবরেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারের কর্মসূচীর আগে রাজনগরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে গত ২১ ডিসেম্বর নিবন্ধন অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছেন। এর কোন সুরাহ না হওয়াতে মঙ্গলবার এই কর্মসূচী পালন করলেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
এনএইচবি/এমএমএ/