ঘুষ না পেয়ে প্রতিবন্ধীর পা ভাঙার হুমকি চেয়ারম্যানের!
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে ফোরকান আকন নামের এক প্রতিবন্ধীর পা ভেঙে দেওয়ার হুমকী দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম নাসির। সম্প্রতি ফোরকানের সঙ্গে কথোপোকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই অডিও রেকর্ড সূত্রে জানা যায়, পাঁচ বছর পূর্বে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের মতিয়ার রহমান আকনের ছেলে ফোরকার আকন সুপারী গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। এতে তার উভয় পা অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘবছর চিকিৎসাধীন থাকলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সবশেষ ২০২১ সালের মাঝামাঝি বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিজ তত্ত্বাবধানে ফোরকানের চিকিৎসা করান। শারীরিকভাবে সুস্থ হলেও তার পা আর ভালো হওয়ার সুযোগ নেই এমনটা জানিয়ে দেন পঙ্গুর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
এরপর বাড়িতে ফিরে আসেন ফোরকান। এমপি রিমন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে একটি পাকা ঘর বরাদ্দ দেন। এ ছাড়া নারী সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা সম্প্রতি ফোরকানকে চিকিৎসা সহায়তায় অর্থ ও দোকান তৈরি করে দেন। নিয়মিত ওষুধ সেবনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা দরকার হয় তার। এই টাকা বিভিন্ন দানশীল মানুষদের সহায়তা নিয়ে জোগাড় করেন তিনি। সম্প্রতী দাতা সংস্থার সহায়তার আবেদনের জন্য একটি কাগজে স্বাক্ষরের জন্য চেয়ারম্যান নাসিরের ফোনে কল করেন ফোরকান। কিন্ত গোলাম নাসির টাকা দাবি করে ঘুরাতে থাকেন।
ফোরকান হাল না ছেড়ে অন্য একটি নম্বর দিয়ে চেয়ারম্যানকে কল করেন। এতে ক্ষীপ্ত হন চেয়ারম্যান গোলাম নাসির। তিনি ফোরকানকে ধমক দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, 'তুই আমারে বার বার টেলিফোন করো ক্যান? তোরে আমি স্বাক্ষর দেব না, পাইছোডা কি? আমারে চেন তুই! আমাদের কখনো কল করবি না। তোর একটা ঠ্যাঙ ভাঙা আরডাও ভাইঙ্গা দিমু, তুই আমারে মানুষই চেনো নাই। আর কোনো সময় কল করবি না' বলে তিনি লাইন কেটে দেন।
কথোপোকথনের সেই রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে যোগাযোগ করা হয় কালমেঘা ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম নাসিরের সঙ্গে। তিনি দাবি করেন, ওই রেকর্ড তার নয়। এটা বানানো ও ভুয়া। তিনি বলেন, 'আমি ফোরকানকে কেন হুমকি দেব! এরকম কোনো কথাই ওর সাথে আমার হয়নি।'
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ বলেন, 'আমি ওই অডিও শুনিনি। তবে ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে বিষয়টি দেখব।'
টিটি/