নওগাঁয় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
নওগাঁয় স্ত্রী হত্যার দায়ে মো. মোস্তাফিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) নওগাঁ’র বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদ এই রায় প্রদান করেন। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জেলার পোরশা উপজেলার শাহপুকুর দীঘিপাড়া গ্রামের মো. আকবর আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে পোরশা পূর্বগ্রাম (উস্তাপাড়া) গ্রামের মো. রবিউল ইসলামের মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৬) এর সাথে বেশ কিছুদিন আগে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়। তাদের বিবাহিত জীবনে একটি মেয়ে সন্তান ও একটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
জীবিকার তাগিদে মোস্তাফিজুর রহমান স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে নিয়ে কুমিল্লা গিয়ে বসবাস শুরু করেন। সেখানে বসবাসকালে দাম্পত্য জীবনে কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান গ্রামের বাড়িতে তার পিতা মাতার নিকট রেখে যায়। এরই এক পর্যায়ে সে বাড়িতে বেড়াতে আসে। ঘটনার দিন গত ২২ সালের ১২ জুন সকাল ৭টা থেকে ৭টা ১৫ মিনিটের মধ্যে স্ত্রী উক্ত ফাতেমা বেগমকে গলা টিপে হত্যা করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যান টাঙ্গানো বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা চালায়। সংবাদ পেয়ে ফাতেমার পিতা রবিউল ইসলাম ঘটনার দিনই জামাই মোস্তাফিজুর রহমানকে একমাত্র আসামী করে পোরশা থানায় ৩০২/২০১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে চার্জশটি দাখিল করে। পরবর্তীতে আসামীর বিরুদ্ধে দি প্যানেল কোড ১৮৬০ এর ৩০২/২০১ ধারায় আভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযোগে উল্লিখিত ১৮ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন স্বাক্ষীকে আদালতে হাজির করে স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। শুনানী শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ উক্ত আসামীর উপস্থিতিতে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালত মৃত্যুদন্ড ছাড়াও আসামীর বিরুদ্ধে আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা’র নির্দেশ প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে বিজ্ঞ পিপি এ্যাড. মোঃ আব্দুল খালেক এবং আসামী পক্ষে স্টেট ডিফেন্স এ্যাড. মোঃ রফিকুল ইসলাম বেনু মামলাটি পরিচালনা করেন।