দিন দিন কমে যাচ্ছে কাঁঠাল গাছের সংখ্যা
কাঁঠাল গাছে থোকা থোকা মুচি। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
মাঘ পেরিয়ে বসন্তের হওয়া লেগেছে প্রতিটি ফলবৃক্ষের গাছপালায়। প্রকৃতির রুপ সজ্জার পরিবেশ ও প্রকৃতি অনিন্দ্য সৌন্দর্য ধারণ করছে। এলাকা ও শহরজুড়ে ফুল ও ফলে ভরে উঠেছে। এরমধ্যে গ্রীস্ম মৌসুমের একটি জনপ্রিয় ও দেশের জাতীয় একটি ফল কাঁঠাল।
চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইল জেলার ১২ টি উপজেলায় রাস্তা পাশে, বাড়ির আঙিনা ও পরিত্যক্ত জায়গায় লাগানো কাঁঠাল গাছে থোকা থোকা মুচি ধরেছে। কাঁঠালের মুচিতে ছড়াচ্ছে সুভাস।
সরেজমিনে জেলার ভূঞাপুর, ঘাটাইল, কালিহাতীসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়- গত বছরের মতো এ বছরও প্রতিটি গাছে প্রচুর কাঁঠাল গাছে মুচি ধরেছে। বসতবাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে রাস্তার দু’পাশ ও বিভিন্ন স্থানে কাঁঠালের প্রচুর মুচি শোভা পাচ্ছে। ছোট-বড় প্রতিটি কাঁঠাল গাছের গোড়া থেকে শুরু করে মগডাল পর্যন্ত থোকা থোকা ঝুলছে কাঁঠালের মুচি। এ থেকে মৌ-মাছিরা মনের আনন্দে মুচি থেকে মধু আহরণ করছে।
ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া গ্রামের কাঁঠাল চাষি মহর আলী বলেন, ‘বাড়ির আঙিনা ও বাড়িতে লাগানো কয়েকটি কাঁঠাল গাছে গত বারের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি কাঁঠাল মুচি ধরেছে। প্রতিটি গাছে ১০০-১২০ টি বা আরও অধিক হবে। যদি আবহাওয়া অনূকূলে থাকে তাহলে এ বছর প্রতিটি গাছে প্রায় শতাধিক কাঠাল থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। মুচি পরিপক্ষ হতে আরও ৩৫-৪৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।’
একই উপজেলার ভারই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ সৈয়দ মাসুদুল হক টুকু বলেন, ‘রাস্তার পাশে ও বাড়ির চারপাশে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৩ টি অনেক পুরনো ও নতুন কাঁঠাল গাছ রয়েছে। গতবারের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে বেশি মুচি ধরেছে। প্রতিদিন সকালে গাছের পানি দিচ্ছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে তিনভাগের দুই ভাগ মুচি টিকতে পারে। এছাড়াও কাঁঠাল মুচি থেকে রোগ বালাইরোধে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
এদিকে, দিন দিন কমে যাচ্ছে জাতীয় ফল কাঁঠাল গাছের সংখ্যা। কাঠ জাতীয় চারা রোপনে ঝুঁকছে মানুষ। এনিয়ে কথা হয় নলুয়া গ্রামের নার্সারী মালিক হাসমত আলীর সাথে। তিনি বলেন, ‘আগের মতো এখন আর কাঁঠাল গাছের চারা বিক্রি হয় না। যার কারণে নার্সারীতে কাঁঠালের চারা উৎপাদনও কম করা হচ্ছে। তবে, কৃষি বিভাগের জোড়ালো তৎপরতা ও চাষিদের উৎসাহ প্রদান করলে কাঁঠাল চারা রোপনে ঝুঁকবে মানুষ।’
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. দুলাল উদ্দিন বলেন, জেলার ১২ টি উপজেলায় ৪ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল গাছ রয়েছে। এরমধ্যে মধুপুর, ঘাটাইল, সখীপুর ও ধনবাড়ী উপজেলায় বেশি কাঁঠাল চাষ হয়ে থাকে। এ বছর চলতি মৌসুমে আমাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৮৪ মেট্রিক টন। কাঁঠালের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।