টাঙ্গাইলে জনপ্রিয় হচ্ছে রঙিন ফুলকপি, পরীক্ষামূলক চাষে কৃষকদের বাজিমাত
ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলে জনপ্রিয়তা বাড়ছে নতুন জাতের রঙিন ফুলকপি চাষে। পরীক্ষামূলক রঙিন ফুলকপি চাষে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন জেলার ১২ উপজেলার ফুলকপি চাষিরা। উৎপাদন খরচ কম ও বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় বাণিজ্যিকভাবে আগামীতে বছরে আরও বেশি জমি জমিতে চাষ করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষকরা।
এদিকে, রঙিন ফুলকপি দেখতে এসে কপি কিনে নিচ্ছেন উৎসুক জনতারা। কৃষক ও ফুলকপির সঙ্গে কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউ বা ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও ধারণ করছেন। প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপির চাষ দেখে স্থানীয় কৃষকরাও চাষিদের থেকে নানা ধরণের পরামর্শ নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় সদরে চলতি বছর শীত মৌসুমে রঙিন ফুলকপি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প থেকে জেলায় ১২ টি উপজেলার চাষিদের পরীক্ষামূলকভাবে ২৪ হাজার রঙিন কপির চারা দেওয়া হয়।
এরমধ্যে ১২ হাজার হলুদ ও ১২ হাজার বেগুনি রঙের। ১২টি উপজেলায় ৬ বিঘা জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষা করা হয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে চারাগুলো রোপণ করেন কৃষকরা। তারমধ্যে ক্যারোটিনা ও ভ্যালেন্টিনা জাতের ফুলকপি দেয়া হয় চাষিদের। রঙিন ফুলকপির বীজ ভারত থেকে সংগ্রহ করা হয়।
রঙিন ফুলকপি চাষি আরশেদ মিয়া। তিনি জেলার ভূঞাপুর উপজেলা পৌর শহরে ছাব্বিশা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গতবারের মতো এবারও ১৬ শতাশ জমিতে রঙিন ফুল কপি চাষাবাদ করেছেন। গত বছর তিনি ভাল লাভবান হয়েছিলেন। যার কারণে এবারও কৃষি বিভাগের সহায় রঙিন ফুলকপি চাষ করেন।
রঙিন ফুলকপি খেত দেখতে আসা ভূঞাপুর উপজেলার পাথাইলকান্দী গ্রামের হাসান মাহমুদ বলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবে রঙিন ফুলকপি দেখেছি। ছাব্বিশা এলাকায় এই ফুলকপি চাষের খবরে এখানে আসি। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে। এর চাহিদাও দ্বিগুণ। খেতেও অনেক সুস্বাদু।
ধনবাড়ী উপজেলারর মুশুদ্দি গ্রামের চাষি মিজানুর রহমান শিবলী মিয়া ও ইদ্রিস আলী বলেন, ১৫ শতাংশ জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করেছি। জমি থেকেই পাইকারা বেশি দাম দিয়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাগীতে আরও বেশি জমিতে চাষ করব। দাম ভালো থাকায় অন্য কৃষকরা এ জাতের কপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষি রুমানা আকতার বলেন, কৃষকের মধ্যে কৃষিবিষয়ক নতুন তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। অন্যান্য উপজেলার মতো পরীক্ষামূলকভাবে সদর উপজেলাতেও রঙিন ফুলকপির চাষ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত) উপ-পরিচালক দুলাল উদ্দিন বলেন, জেলার ১২ টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে আগ্রহী কৃষকদের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী হিসেবে ক্যারোটিনা ও ভ্যালেন্টিনা এই দুই জাতের রঙিন ফুলকপি চাষাবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে জেলাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে রঙিন ফুলকপি কিভাবে বেশি আরও বেশি চাষ যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একইসাথে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বক্ষণিক প্রযুক্তিগত সকল ধরণের সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এনিয়ে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।