কুড়িগ্রামে পাউবোর বিশেষ চিহ্ন দেওয়া শতাধিক জিও ব্যাগ জব্দ
কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ির বাঙটুর ঘাট এলাকা থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বিশেষ চিহ্ন দেওয়া ১২৮টি জিও ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে পাউবো ও সদর থানা পুলিশের একটি টিম এসব জিও ব্যাগ উদ্ধার করে। আরো জিও ব্যাগ উদ্ধার হতে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মাহমুদ হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, মমিনুলের বাড়ি সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। মূল ঠিকাদার পাবনার বাসিন্দা গোলাম রব্বানীর কাছ থেকে তিনি জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের সাব কন্ট্রাক্ট নিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকালে একটি ট্রলিতে করে পাউবোর চিহ্ন দেওয়া শতাধিক জিও ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তারের বাড়ির সামনে স্থানীয় লোকজন ট্রলিটি আটক করে। এ সময় ট্রলির চালক পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ও পাউবোর লোকজন এসে জিও ব্যাগগুলি জব্দ করে। স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে সাব কন্ট্রাক্টর মমিনুল ও তার লোকজনের বাড়ি থেকে আরও কিছু জিও ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মমিনুলকে আটক করা যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জিও ব্যাগে বালু ভর্তির পর পাউবো চিহ্ন দিলে তা ডাম্পিং করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন তা ডাম্পিং না করে বিল তুলে নেন। কাজে এভাবে ফাঁকির ফলে প্রতি বছর নদীভাঙন রোধে সরকারের বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা পানিতেই চলে যায় কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। পাউবোর লোকজনও এসব সিন্ডিকেটে জড়িত বলে অভিযোগ তাদের।
এ ব্যাপারে পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মাহমুদ হাসান জানান, ওই ব্যাগগুলো মূলত নিয়োগকৃত ঠিকাদার গোলাম রব্বানীর। তিনি স্থানীয় মমিনুলকে সাব কন্ট্রাক্ট দিয়েছিলেন। জিও ব্যাগগুলোতে বালু ভর্তির পর পাউবো সেগুলো সেলাই করে বিশেষ চিহ্ন দিয়েছিল। কিন্তু তখনও এগুলো ডাম্পিং করা হয়নি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ রাতের আঁধারে ওই জিও ব্যাগগুলোর বালু ফেলে দিয়ে সেগুলো বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন মমিনুল ও তার লোকজন। মূলত ডাম্পিং খরচ বাঁচিয়ে মূল ঠিকাদার ও পাউবোকে ফাঁকি দিতেই তার (মমিনুলের) এই কৌশল।’
আরও কয়েক শত চিহ্নিত জিও ব্যাগের বালু ফেলে তা লুকিয়ে রাখা হয়েছে জানিয়ে পাউবোর এই উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন খবর আছে। আমরা পুলিশের সহায়তায় সেগুলো উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করছি আরও কয়েকশ’ ব্যাগ উদ্ধার করতে পারব।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ হাসান বলেন, ‘ব্যাগগুলো পুলিশ জব্দ করেছে। এগুলো এখনও সরকারি সম্পদ হয়নি। মূলত ডাম্পিংয়ের পর বিল দিলে এসব জিও ভ্যাগ সরকারি সম্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু এগুলো ডাম্পিং হয়নি এবং বিলও দেওয়া হয়নি। যেহেতু এগুলো এখন পর্যন্ত ঠিকাদারের তাই আইনগত ব্যবস্থা নিলে ঠিকাদার নেবেন।
এসিআর/এসআইএইচ