ঘন কুয়াশায় মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষ, নিহত ১
ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী এমভি সুরভী-৮ ও এমভি টিপু-১৪ লঞ্চের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে লঞ্চে থাকা সোহেল নামের এক যাত্রী নিহত হন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে মেঘনা নদীর কোন এক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক সাহাদাত হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী ও বরিশালের হিজলা নদীর সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘন কুয়াশায় দুটি লঞ্চের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ভোলার ইলিশা থেকে ঢাকাগামী এমভি সুরভী-৮ ও ঢাকা থেকে চরফ্যাশনগামী এমভি টিপু-১৪ লঞ্চের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে লঞ্চের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
দুর্ঘটনায় সোহেল (৩০) নামের এক লঞ্চ যাত্রী নিহত হন। তবে, তার পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
হাইমচরের নীলকমল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনা ঘটার পর কেউ একজন ট্রিপল নাইনে ফোন করে জানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা কোন লঞ্চ দেখতে পাইনি। ইতোমধ্যে লঞ্চগুলো স্ব স্ব গন্তব্যে পৌঁছে গেছে।
চাঁদপুরের নৌ পুলিশের এসপি মো. কামরুজ্জামান বলেন, সুরভী লঞ্চের যে যাত্রী মারা গেছে তা নিশ্চিত। তবে সে কি মুঠোফোনে কথা বলছিল, নাকি কেবিনের মধ্যে ছিল বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অন্যদিকে মঙ্গলবার রাত ১টায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকায় এম ভি রফরফ-৭ ও এমভি এ আর খান-১ লঞ্চের মধ্যে পৃথক আরও একটি সংঘর্ষ হয়। এতে লঞ্চের দোতলার টেক্সিন ভেঙ্গে যায়।
চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আব্দুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রফরফ লঞ্চে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকা থেকে ফরিদগঞ্জে বাড়ি ফিরছিলেন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, এ আর খান নামের একটি লঞ্চ তাঁদের লঞ্চটিকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে রফরফের সিটে থাকা পাঁচজন যাত্রী প্রায় দুই থেকে তিন হাত দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। তিনি মাথায় ও হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
আহত যাত্রী মো. মাসুম (৩৫) বলেন, যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, এতে অল্পের জন্য রফরফ ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে।
অপর যাত্রী নেছার আহমেদ বলেন, দুটি লঞ্চই তিনতলাবিশিষ্ট এবং প্রায় আড়াই শ ফুট লম্বা হওয়ার কারণে রক্ষা পেয়েছে। তবে ছোট লঞ্চ হলে বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত।
লঞ্চের স্টাফ মো. রুবেল বলেন, ঘন কুয়াশা থাকলেও তাঁরা রাডার ব্যবহার করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এ আর খান লঞ্চটি রাডার ব্যবহার না করায় এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
চাঁদপুর নদী বন্দর কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বলেন, লঞ্চের মাস্টার ড্রাইভারদের প্রতিনিয়ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং ঘন কুয়াশার মধ্যে নৌযান পরিচালনা না করার নির্দেশ দেওয়া থাকলেও (বন্দর বিজ্ঞপ্তি) তারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করে নৌযান পরিচালনা করার কারণেই এই ধরনের দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।