রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছয়জনের মধ্যে দুজনের পরিচয় মিলেছে। তাঁদের মধ্যে একজন পটুয়াখালীর বাউফলের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতা আমিনুল ইসলাম,অন্যজন শ্রমিক দল নেতা সুমন মোল্লা।
এর মধ্যে আমিনুল পেশাদার ডাকাত। আগেও তাঁকে ডাকাতি মামলায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার তাঁদের গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হলে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার আমিনুল ইসলাম বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের নতুন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এলাকার বাসিন্দা এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। আর সুমন মোল্লা একই ইউনিয়নের পাশের গ্রাম আয়নাবাজ কালাইয়ার বাসিন্দা। তিনি কালাইয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল আগে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় জেলা পুলিশের কয়েকটি টিমের যৌথ তদন্তে আন্তবিভাগ ডাকাল দলের সদস্যরা শনাক্ত হন। অভিযান চালিয়ে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর আমিনুলসহ সাত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ডাকাত দলকে আশ্রয় দেওয়াসহ অস্ত্রের জোগানদাতাও ছিলেন আমিনুল। এ ছাড়া একাধিক ডাকাতির নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে আমিনুল এ অভিযোগ স্বীকারও করেছিলেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে ওই দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে তাঁদের পরিচয় জানাতে গিয়ে কেউ নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পরিচিত ও প্রভাবশালী নেতা আমিনুল ইসলাম। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সঙ্গে সাবেক চিফ হুইপ ও পটুয়াখালী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ফিরোজের ছেলে রায়হান সাকিব, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে তাঁর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ মঞ্জু বলেন, ‘আমি ওনাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। উনি কমিটিতে কীভাবে এলেন বলতে পারছি না। তবে ইউনিয়ন শ্রমিক দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত তাঁকে বহিষ্কার করার জন্য।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমিনুল পেশাদার ডাকাত এবং তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আগেও তাঁকে ডাকাতির ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এর আগে শুক্রবার (৭ মার্চ) ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর ও মাদারীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের থেকে লুষ্ঠিত স্বর্ণের মধ্যে ৪ ভরি ৯ আনা স্বর্ণ, বিক্রিত স্বর্ণের মূল্য বাবদ নগদ দুই লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা, একটি রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।