নেত্রকোনায় ঈদে রাজধলা বিলে দর্শনার্থীদের ভিড়
নেত্রকোনার পুর্বধলায় নৈসর্গিক সৌন্দর্যের রাজধলা বিল দেখার জন্য ঈদের দিন থেকে জমে উঠেছে অগণিত দর্শনার্থীদের ভিড়। পুর্বধলা সরকারি কলেজ। তার অনতিদূরে রয়েছে শতবর্ষী পূর্বধলা রাজধলা বিল। কলেজের ভেতরে সবুজ গাছের অপরূপ সৌন্দর্যবর্ধনে সুশীতল ছায়া সব সময় উপভোগ্য। আর একটু ভেতরে প্রবেশ করা মাত্রই চোখে পড়বে নান্দনিক ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় রাজধলা বিল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার জেলার পূর্বধলায় উপজেলার ১৩০ একর আয়তন বিশিষ্ট বৃহদাকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্যে ঘেরা ঐতিহ্যবাহী রাজধলা বিল। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্যে এক আকর্ষণীয় স্থান। রাজধলা বিল শুধু নামেই একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান নয় আবহমান কাল থেকে এর সাথে জড়িত রয়েছে অনেক মজাদার গল্প ও কাহিনী। স্বচ্ছপানি ও মনোরম পরিবেশের কারণে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসে ভ্রমণপিপাসু মানুষ। ঈদ ও পূজায় অবসর সময় কাটাতে ও আনন্দ বিনোদন উপভোগ করতে স্থানীয় আদিবাসীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের পদ চারণায় মুখরিত হয়ে উঠে রাজধলা বিল।
এলাকার লোক মুখে শোনা যায়, প্রকৃতির মনোরম পরিবেশের কারণে জমিদারদের একাংশ স্থানান্তরিত হয়ে ধলা বিলের পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে বসতি স্থাপন করে। জমিদারদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিলের পানি প্রজা সাধারণের ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। জানা যায়, ধলা শব্দের সঙ্গে সুসং জমিদার পরিবারের বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত রাজা উপাধিটা সংযুক্ত হয়ে বিলের নামাকরণ হয় রাজধলা। জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে বিল রক্ষা ও উন্নয়নে কাজ হয়েছে। বিলের সৌন্দর্যবর্ধনে ও মানুষের চলাচল উপযোগী রাস্তা, ঘাট ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। যা সৌন্দর্য পিপাসু মানুষদের কাছে উপভোগ্য ।
এলাকাবাসী নিরঞ্জন কুমার ভাদুরি বলেন, বিলের চারদিকে সড়ক দিয়ে বেষ্টিত করে পাকা করণ করে এবং লিজ দেওয়া জমি নিয়ে সংস্কার করে আয়ের আওতায় আনা যেতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐতিহাসিক রাজধলা বিলে দিন দিন দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের অভিযোগ ও রয়েছে। সংস্কারের অভাবে রাস্তার মাটি সরে রাস্তাগুলো ভেঙে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও আবাসন ব্যবস্থা তেমন নেই। রাজধলা বিলের পাড় ঘেঁষে চারপাশ পাশে ব্লক বসিয়ে পাকা নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করলে উপভোগ্য ও মনোরম হবে।
বিল দেখতে আসা নেত্রকোনা জেলা শহরের কাজল মিয়া বলেন, রাজধলা বিলের কথা লোকমুখে শুনেছি। আজ এ বিল দেখে অনুভব করলাম যে একটা বিল এত সুন্দর হতে পারে। এর স্বচ্ছ পানি, জলজ ফুল, খোলা বাতাস সবকিছু মিলে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এখানে। বসার ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আর সুন্দর ছাউনি করলে দর্শনার্থীদের বসার জন্য আরামদায়ক হবে। সৌন্দর্য আরো বাড়বে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন বলেন, নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমরা অর্থ সংগ্রহ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আলোচনা বিভিন্ন মহলে করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আয়ের উৎস হিসেবে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে। আমরা এজন্য কাজ করে আসছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুমা বলেন, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অবশিষ্ট রাস্তাগুলো নির্মাণ ও মেরামত করা হবে। রাজধলা বিলকে পর্যটনের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে।
এসএন