নাটোরে কলেজছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই এলাকার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রীকে বেড়ানোর কথা বলে সিংড়া উপজেলার কলম মীর্জাপুর এলাকার ঈদগাহের পাশে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ওই ১০ জনকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মামলার এক আসামিকে খালাস দিয়েছে আদালত।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরের কিছু আগে জেলা ও দায়রা জজ নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাটোর কোর্ট ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম এবং ওই আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বড়াইগ্রামের ধানাইদহ এলাকার মুস্তাফিজুরের ছেলে ছাব্বির আহম্মেদ(১৮), একই উপজেলার জামাতিদিঘা এলাকার রেজাউল করিমের ছেলে রেজাউনুল ওরফে রাব্বী(১৯), সিংড়া উপজেলার নাছিয়ারকান্দি এলাকার রশিদের ছেলে নাজমুল হক((১৯),একই উপজেলার মহিষমারী এলাকার কাদেরের ছেলে রাজিবুল হাসান(১৮), রিপন ও কলম এলাকার শহিদুল(২৫)।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মহিষমারী এলসকার আয়চানের ছেলে মনিরুল (১৮), খায়রুল ইসলাম,আতাউল ইসলাম ওরফে আতাউর ও রেজাউল করিম। ওই মামলায় খালাস পেয়েছেন নাছির।
এ ব্যাপারে নাটোর কোর্ট ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম এবং ওই আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান জানান, বড়াইগ্রামের অধিবাসী ওই মেয়ে এবং একই এলাকার আসামি ছাব্বির রাজশাহীতে পড়ালেখা করত। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে সম্পর্কের জেরে ছাব্বির ওই মেয়েকে বেড়ানোর কথা বলে সিংড়ার অধিবাসী, ছাব্বিরের বন্ধু আসামি রাব্বির কাছে আসে। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা ( ছাব্বির ও রাব্বি) অন্যান্য আসামিদের ডেকে নেয়।
তারা আরো জানান,২০১২ সালের ২০ অক্টোবর বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই এলাকার অধিবাসী ভুক্তভোগী কলেজ পড়ুয়া ওই মেয়ের বাবা বাদী হয়ে ১১ জনের নাম এবং অজ্ঞাত আরো ২-৩ জনের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।
মামলায় তিনি (মেয়ের বাবা) অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে আগের দিন বেড়ানোর কথা বলে আসামিরা একটি ভ্যানে এবং তার মেয়ে অপর ভ্যানে সিংড়ার কলম মীর্জাপুর এলাকায় যায়। রাত হয়ে গেলেও তার মেয়েকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আটকে রাখে। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠের পাশে আসামিরা পালাক্রমে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয় অজ্ঞান অবস্থায় তার মেয়েকে দেখে কবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। দীর্ঘ শুনানির পর ওই আদেশ দিলেন আদালত।
এক প্রশ্নের জবাবে পিপি অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান জানান, আসামিদের মধ্যে ৩ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ৬ জন উপস্থিত ছিলেন।
এসআইএইচ
