নীলফামারীর ওই বাড়িতে আইইডি তৈরি হতো
নীলফামারীর জঙ্গি আস্তানা থেকে জেএমবির সামরিক শাখার প্রধানসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব জানিয়েছে, সেখানে নিয়মিত ইম্প্রভাইজড এক্সপ্লোসিভস ডিভাইস (আইইডি) তৈরির প্রশিক্ষণ চলত। পাশাপাশি তারা রংপুরের শ্রমিক, অটোরিক্সা চালক এবং টেইলারদের জঙ্গিবাদে অন্তর্ভুক্তির চেষ্টা চালাতেন। শনিবার ভোররাত থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখার পর সকালে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, সকাল ১১টা পর্যন্ত র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৩ এর অভিযানে নীলফামারী সদরের মাঝাপাড়া থেকে জেএমবির নীলফামারীর রংপুর অঞ্চলের জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান আহিদুল ইসলাম ওরফে আহিদ ওরফে পলাশকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
পলাশের সঙ্গে তার আরও চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- মো. ওয়াহেদ আলী ওরফে আব্দুর রহমান (৩০), আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডা. সুজা (২৬), মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ (২৭) এবং মো. নূর আমিন ওরফে সবুজ (২৮)। অভিযানে বিপুল পরিমাণ আইইডিসহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়। এরমধ্যে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, ৫ রাউন্ড গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার জঙ্গিরা জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য। তারা; আইইডি তৈরি ও আইইডি তৈরির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। গত ২ থেকে ৩ মাস আগে জঙ্গি আহিদুল ইসলাম তার বাড়িতে ইম্প্রভাইজড এক্সপ্লোসিভস ডিভাইস (আইইডি) তৈরি করেছিল। সে সময় গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে তার বাড়িতে আগুন ধরে যায়। তারা ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েব পেইজ দেখে কিভাবে বোমা তৈরি করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাভ করে।
অভিযান শুরু হলে সদর দপ্তর থেকে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল কে এম আজাদ এবং আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সংবাদ সম্মেলনে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘জেলখানায় অন্তরীন থাকা শীর্ষ জঙ্গিদের জেলখানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া-আসার পথে হামলা চালিয়ে তাদের মুক্ত করা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছিল।
অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার জঙ্গিরা অনলাইনে রংপুর অঞ্চলের আমিরের নির্দেশনায় বেশ কয়েকদিন যাবৎ আইইডি তৈরি করে জঙ্গি শরীফের বাড়িতে রাখে। তারা রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ২০-২৫ জনকে জঙ্গি সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করে। তাদের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের বেশ কয়েকজন শ্রমিক, অটোচালক, টেইলার ইত্যাদি শ্রেণি-পেশার মানুষকে জঙ্গিবাদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এনএইচ/এএন