ভালোবাসায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সীমান্তের কাঁটাতার

মেহেরপুর সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া দুই দেশের যোগাযোগে বাধা হয়ে দাঁড়ালেও সীমান্ত গ্রামের মানুষের ভালোবাসার বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। গাংনী উপজেলার খাসমহল ও রংমহল গ্রামের অন্তত ৩৫ জন ভারতীয় নারী বাংলাদেশী ছেলেদের বিয়ে করে সংসার করছেন। ভারত সীমন্ত জুড়ে কাঁটাতারের বেঁড়া থাকার কারনে পিতা মাতার মুখ দেখা হয়নি বছরের পর বছর। এমনকি বাবা মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েও মুখ পর্যন্ত দেখতে দেয়নি সীমান্তের কাঁটাতার। তবুও কমতি নেই স্বজনদের প্রতি ভালোবাসার।
শতাধিক কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে মেহেরপুর সীমান্ত। এই সীমান্তের কাঁটাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধা হয়ে দাঁড়ালেও বাবা মা ও সন্তানের ভালোবাসায় একটুও কমতি হয়নি। ভারত সীমন্ত জুড়ে তাঁরকাটা থাকার কারণে বাবা মা ও মেয়েদের মুখ দেখা হয়নি বছরের পর বছর।
তেমনি একজন ভারতের নদীয়া জেলার মুরুটিয়া থানার রংপুর গ্রামের দুখু মিয়ার মেয়ে রোজিফা খাতুন প্রায় ২৫ বছর পূর্বে বাংলাদেশের গাংনী উপজেলার খাসমহল গ্রামের নকিম উদ্দীনকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের পর দুই এক বার পিতা মাতার সঙ্গে দেখা করতে পারলেও সীমান্তের কাঁটাতারের কারণে প্রায় ২০ বছর যাবৎ দেখা হয়নি তাদের সঙ্গে।
এমনকি আন্তীয় স্বজনদের অনেকেই মৃত্যু বরণ করলেও তাদের মুখ পর্যন্ত দেখতে পারিনী। স্বামী সংসার আর ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাবা মাকে না দেখার কষ্ট ভুলে থাকেন তিনি। তবুও তার কমেনি স্বজনদের প্রতি ভালোবাসা। রোজিফা খাতুনের মত অন্তত ৩৫জন ভারতীয় নারী বিয়ে করে সংসার করছেন বাংলাদেশের রংমহল ও খাসমহল গ্রামে।
রোজিয়া খাতুন বলেন, প্রায় ১৭ বছর বাবা মা ভাই বোন ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা হয়নি। আত্মীয় স্বজন মারা গেলে দেখতি পাইনি। সরকারী উদ্যোগে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করার দাবি তার। খাসমহল গ্রামের নকিম উদ্দীন জানান, ভারতে বিয়ে করেছি। কিন্তু সীমান্তের কাঁটাতারের কারণে শশুর শাশুড়ী সহ স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে না পারার কষ্ট তো সব সময় হয়।
একই গ্রামের আছিয়া খাতুন বলেন, যখন তারকাঁটা ছিলনা তখন বিয়ে হয়েছে। তা প্রায় ৫০ বছর। কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: হুসাইন বলেন, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া দুদেশের যোগাযোগে বাধা হয়ে দাঁড়ালেও সীমান্ত গ্রামের মানুষের ভালোবাসার বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
এএজেড
