নওগাঁয় নতুন আলুর কেজি ২০০ টাকা

নওগাঁর বাজারে নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে শহরের পাইকারি কাঁচাবাজারে গিয়ে এ দামে নতুন আলু বিক্রি করতে দেখা যায়।
তবে যোগান ছিল খুবই কম। খুচরা সবজি বিক্রেতা বেলাল, ইসাহাক ও কাশেমসহ অনেকে এই আলু নিয়ে আসেন পাইকারি বাজার থেকে। এর মধ্যে ইসাহাক ২০ কেজি ও বেলাল ১৫ কেজি আলু নিয়ে এসেছিলেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই আলু বিক্রি করেন তারা। পরিমাণে কম করে হলেও নতুন আলু কিনেছেন ক্রেতারা। কেউ কিনেছেন ২০০, কেউ ২৫০ বা ৫০০ গ্রাম।
বিক্রেতারা জানান, সকালে ২০০ টাকা কেজি দরেই আলু বিক্রি করেছেন। দুপুরের পর ক্রেতা কমে যাওয়ায় কিছুটা কমে বিক্রি করে করছেন।
জানা গেছে, বাংলা দিনপঞ্জিকা অনুযায়ী পহেলা অগ্রহায়ণকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসব হিসেবে পালন করেন। এই নবান্ন উৎসবে নতুন ধানের ভাত ও পায়েশের পাশাপাশি শাক-সবজি ও তরি-তরকারিও হয় নতুন ফসল দিয়ে। এখনো নতুন আলু বাজারে ওঠেনি। এই আলু উঠতে আরও অপেক্ষা করতে হবে ১৫-২০ দিনের মতো। কিন্তু এরই মধ্যে নবান্ন উৎসব। তাই এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে অল্প আলু নিয়ে বসেছিলেন অনেক ব্যবসায়ীরা। আর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বেশি দামে এই আলু কিনেছেন।
আলু বিক্রেতা বেলাল বলেন, আমি সকালে এই আলু কিনেছি কৃষকের কাছ থেকে। নবান্নের সময় আলুর দাম বেশি থাকে। সকালে এই আলু কিনেছি বেশি দামে। নতুন আলু তো বাজারে একেবারেই কম। শুধু আলুই নয়, নতুন সবজি হিসেবে ওল বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি, সজনে বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। নতুন আলু এখনো ওঠেনি, সজনে গাছে নেই আর ওল ওঠার সময় এটা নয়। তাই একটু বেশি দাম।
আরেক বিক্রেতা ইসাহাক বলেন, সকালে আমি বদলগাছি থেকে পাইকারি হিসেবে ১০ কেজি আলু কিনেছি ১৮০ টাকা কেজি দরে। এখানে আনার পর বিক্রি করেছি ১৮০-২০০ টাকা কেজি হিসেবে। নতুন সবজি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভগবান কে দিতে হয়, তাই ক্রেতারা নিয়েছে কেউ ১০০ গ্রাম, কেউ ২০০-২৫০ গ্রাম আবার কেউ ৫০০ গ্রাম।
নওগাঁ পাইকারি সবজি বাজারে নতুন সবজি কিনতে এসেছেন শহরের কালিতলা এলাকার বাসিন্দা শ্রী সঞ্চয় কুমার দাস। তিনি ঢাকা প্রকাশ-কে বলেন, নবান্ন উৎসব হিন্দুদের একটি প্রাচীন প্রথা। এপার বাংলা ও ওপার বাংলার ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব নবান্ন। পালিত হয় অগ্রহায়ন মাসেই। নতুন ধান উৎপাদনের সময় পিতৃ-পুরুষ অন্ন প্রার্থনা করে থাকেন। এই কারণে হিন্দু বিধি অনুযায়ী নবান্নে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করে থাকেন। বাংলার কৃষি সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম।
তিনি আরও বলেন, শাস্ত্রমতে, নবান্ন শ্রাদ্ধ না করে নতুন অন্ন গ্রহণ করলে পাপের ভাগী হতে হয়। এক সময় অত্যন্ত সাড়ম্বরে নবান্ন উৎসব উদযাপন হতো। সকল মানুষের সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসেবে নবান্ন উৎসব সমাদৃত ছিল। কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নবান্ন উৎসব বিলুপ্তপ্রায়।
এসএন
