পাঙ্গাশ মাছে সয়লাব ভোলার ঘাটগুলো

পাঙ্গাশ মাছে সয়লাব ভোলার মাছঘাটগুলো। প্রায় সব রকমের জালে পাঙ্গাশ মাছ ধরা পরলেও এক প্রকার বিশেষ জালের (পাঙ্গাশ জাল) জেলেরাই পাঙ্গাশ মাছ বেশি পাচ্ছেন বলে জানান মৎস আড়ৎদারগন। বিগত অনেক বছর পরে মেঘনায় গত কয়েক দিন ধরে প্রচুর পাঙ্গাশ মাছ ধরা পড়ছে বলে জানান জেলেরা। ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম শেষ হবার পরথেকেই জেলেদের জালে বিপুল পরিমানের পাঙ্গাশ আটকা পড়ছে। ছোট, বড় ও মাঝারি সাইজের এসব পাঙ্গাশ মাছের দামেও বেশ খুশি জেলেরা।
মাছঘাট গুলোতে দেখাযায় প্রতি কেজি পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকা পর্যন্ত। পাঙ্গাস মাছের কেনা-বেচার হাক ডাকে মুখরিত হয়ে উঠছে স্থানীয় মৎস্য ঘাট ও বাজারগুলো। তবে বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি পরিমানে পাঙ্গাশ পাওয়ায় এবং অধিক দামে বিক্রি করে খুশি হচ্ছেন জেলেরা। তবে ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাশ মাছ প্রাপ্তিতে অধিক লাভবান হচ্ছেন জেলেরা।
সাধারণত পাঙ্গাশ মাছের পোনা অন্য মাছ ভোগ করতে পারেনা এদের শরিরের কাটা থাকার কারনে । এ প্রজাতির মাছ ধ্বংসের প্রধান শত্রু হলো মশারিজাল,পাইজাল,বেহুন্দীজাল,খুটাজাল ও চাই । বিগত কয়েক বছর ধরে উপকূলীয় এলাকায় এসব জাল ব্যাপকহারে ধ্বংস করেছে মৎস্য বিভাগ। যার সুফল ভোগ করছে জেলেরা।
ভেলার শামরাজ,পাঁচকপাট,বেতুয়া,হাকিমউদ্দিন, মির্জাকালু, নাসির মঝি , তুলাতুলি মাছ ঘাট, হেতনার হাট, কাজির হাট, রাধাবল্লবসহ বেশ কিছু ঘাটে খবর নিয়ে জানা গেছে এবছর প্রচুর পাঙ্গাশের আমদানি। সাধারণত শীতের শুরু থেকে নদীতে পাঙ্গাশ মাছ পাওয়া যায়। তবে এবছরের মত বিপুল পরিমাণ পাঙ্গাশ বিগত অনেক বছরে পড়তে দেখেনি বলে জানিয়েছেন তুলাতলি ঘাটের মৎস্য আড়ৎদার কামাল বেপারি।
প্রত্যেকটি পাঙ্গাশ দুই /আড়াই কেজি থেকে শুরু করে থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান কামাল বেপারি। নদীর সুস্বাদু এসব পাঙ্গাশের ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মেঘনা পাড়ের ইলিশা মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো: আলাউদ্দিন ফরাজি বলেন, গত ৪ দিন ধরে নদীতে প্রচুর পাঙ্গাশ পাওয়া যাচ্ছে।
রাজাপুর মাছঘাটের ব্যাবশায়ি মাসুদ মেম্বার জানান আমি দীর্ঘদিন যাবৎ মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত, কিন্তু কখনো মেঘনায় জেলেদের এত পাঙ্গাশ মাছ শিকার হতে দেখেনি। আমাদের ঘাটে দৈনিক ৩/ ৪ লক্ষ টাকার পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে বর্তমানে ইলিশ মাছ কিছুটা কমে গেছে বলে জানান তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, অভিযানের পর প্রথম দুই দিন ইলিশ পাওয়া গেলেও এখন ইলিশটা কমে পাঙ্গাশটা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। জেলেদের জালে বর্তমানে যেসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগই পাঙ্গাশ মাছ। সরকার এ অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে পাঙ্গাশের শত্রু চাই ও বেহুন্দী জাল এবং সব ধরণের অবৈধ জাল অপসারণ করে আসছে। ফলে পাঙ্গাশের পোনা বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
তিনি জানান, জেলার মধ্যে উপজেলা সদরে সবচে বেশি পাঙ্গাশ ধরা পড়ছে। এছাড়া পাঙ্গাস মাছ খরস্রতা পানিতে থাকতে বেশি পছন্দ করে। মেঘনা যেহেতু খরস্রতা নদী তাই এখানে এ মাছের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। জেলেরা আগামী একমাস ধরে বেশি পরিমানে পাঙ্গাশ মাছ পেতে পারে এমন সম্ভাবনা রয়েছে বলেন তিনি ।
এএজেড
