রাজাপুরে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৬ দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
রাজাপুরে ৫০ শতাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। শুক্রবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। রাজাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা।
রাজাপুর সদর ইউনিয়নের কৈবর্তখালী এলাকার বাসিন্দা সেলিম মোল্লা বলেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার এক দিন আগেই ছোট কৈবর্তখালী এলাকার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর ছয় দিন কেটে গেলেও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। সিত্রাং এল না কি, বিদ্যুৎ নিয়ে গেল। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তারা বলছে দেবে কিন্তু ছয় দিন হলো এখনো বিদ্যুৎ দেয়নি।
গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মো. লিমন মোল্লা, কানুদাসকাঠি এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম, চাড়াখালী এলাকার বাসিন্দা মাহিনসহ একাধিক গ্রাহক জানান, ঘূর্ণিঝড়ের আগের দিন থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে বসবাস করছেন তারা। ৬ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। কবে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে জানেন না।
বড়ইয়া ইউনিয়নের আদাখোলা এলাকার বাসিন্দা অলি বলেন, গত রবিবার থেকে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ ছাড়া রাত কাটাতে কষ্ট হচ্ছে।
সাতুরিয়া ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা আবিদ বলেন, ৬ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। রাতে অন্ধকারে পড়া-লেখা করতে পারছি না, আর গরমের কারণে কষ্টের শেষ নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিয়েও তাদের পাওয়া যায় না।
মঠবাড়ি ইউনিয়নের পুখরিজানা এলাকার বাসিন্দা সাকিল, মঠবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মো. আলম হাং, বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা সবুর ফকির, ডহরশংকর এলাকার বাসিন্দা আজমির শরীফ, মানকি এলাকার বাসিন্দা কবির, উত্তর সাউদপুর এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম হাংসহ একাধিক গ্রাহক বলেন, আমাদের এলাকা বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে বসবাস করতে অনেক কষ্ট হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায় না। মনে হয় বিদ্যুৎ পেতে আরও ৩-৪দিন লাগবে।
শুক্তাগড় ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার আগের দিন বিদ্যুৎ নিছে এখনো বিদ্যুৎ দেয়নি কবে দিবে জানি না, বিদ্যুৎ বিহীন পুরো এলাকা।’
রাজাপুর উপজেলা শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হলেও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। রাজাপুর পল্লী বিদ্যুতের এজিএম প্রকৌশলী রাজন কুমার দাশ জানান, প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকার বিদ্যুতের লাইন চালু করা হয়েছে। প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে স্বীকার করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। তবে এখনো ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, রাজাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ সেবা চালু করতে কর্মীরা রাত-দিন কাজ করছেন। অনেক চেষ্টায় উপজেলা শহরসহ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হলেও এখনো রাজাপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ রয়েছে। বাকি সব এলাকায় কয়েকদিনের মধ্যে লাইন চালু করা হবে।
এসএন