সবুজে সেজেছে কৃষকের স্বপ্নের মাঠ
সবুজ রঙে সেজেছে কৃষকের মাঠ। যেন কোন জমি আর পতিত নেই। বিস্তৃর্ণ কৃষকের মাঠে মাঠে দু-চোখ জুড়ানো যেন এক অপরুপ সবুজের সমারোহ। কৃষকের স্বপ্নের আমন ক্ষেতের চারিদিকে সবুজ রঙে ভরে উঠেছে। প্রতিটি ধান গাছে র্শীষ বেড়া শুরু করেছে। বৃষ্টি ভেজা বাতাসে দোল খাচ্ছে আমন ধানের গাছগুলো। এ যেন এক নয়ন জুড়ানো দৃশ্যে মেতে উঠেছে ফসলের মাঠ জুড়ে। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সাজিয়ে তুলিছে প্রকৃতির এক অপরুপ রুপ সৌন্দর্য।
সবুজ রঙের ফসলের মাঠ দেখলেই মন ভরে যায়। দেশের উত্তরের জেলার কুড়িগ্রামে অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষক পরিবার কৃষির উপর নির্ভরশীল। ধানসহ সারা বছরেই কোন না কোন ফলন ফলায়। সেই ফসল বিক্রি করে পরিবার-পরিজন জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের প্রধান ফসল ধান। চলতি আমন মৌসুমে অঞ্চলের চাষিরা তাদের প্রধান ফসল উৎপাদনের শুরুতেই বৃষ্টির দেখা মেলেনি।
ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পেয়ে সঠিক সময়ে বাধ্য হয়ে শ্যালোমেশিন ও সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি ক্রয় করে জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করেছেন চাষিরা। এ বছর পানি ক্রয় তাদের স্বপ্নের ফসল বাড়তি খরচ দিয়ে চাষাবাদ করলেও আমনের বাম্পার ফলনের এক উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় আমন চাষিদের কৃষকের মূখে হাসি ফুটেছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক আবুল কাসেম ও পুলিন চন্দ্র রায় জানান, ভরা বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা পাইনি। তবে সঠিক সময়ে শ্যালো-মেশিন ও সেচযন্ত্র দিয়ে পানি কিনে আমন ধান চাষাবাদ করেছি। রোপনের পর বৃষ্টির দেখা মেলে। মাঝে মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবছর আমনের আবাদ গত বছরগুলোর চেয়ে ভাল ফলন দেখা দিয়েছে।
জ্বালানি তেল ও সারের বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অতিরিক্ত খরচ বহন করে আমন ধান চাষাবাদ করলেও এখন সেই স্বপ্নের ফসল দেখে আমাদের মন ভরে যায়। সব মিলে আবহাওয়া অনুকুল থাকলে তারা তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে জানান। একই কথা জানান কৃষক শহিনুর রহমান শাহিনসহ অনেকে।
নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী এলাকার কৃষক শ্যামল চন্দ্র রায় জানান, শুরুতে বৃষ্টির দেখা না পেলেও সেচযন্ত্র দিয়ে আমন ধান রোপন করলে এ বছর আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ফলন ভাল ফলণের সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের দাম ভাল পেলে উৎপাদন খরচ মিটিয়ে কৃষকরা লাভবান হবে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত, এ বছর কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে চাষিরা আমন ধানের চাষাবাদ করেছে। আমন ধানের চারা রোপনের সময় এ বছর বৃষ্টির দেখা না পেয়ে কিছু চাষি শ্যালো-মেশিন ও সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি কিনে আমন ধান রোপন করেছে।
আবহাওয়া অনুকুল থাকায় গত বছরের তুলনায় এবছর বাম্পার ফলনের এক উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে কৃষকরা তাদের প্রধান ফসল ঘুরে তুলতে পারবে। আশা করি ধানের দামও ভাল পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
এএজেড