ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) দিনাজপুর দক্ষিণ জোনাল নিরীক্ষা কার্যালয়ের অডিট কর্মকর্তা মো. জহুরুল আলমের ঘুষবাণিজ্য নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ বিষয়ে রাকাব বিভাগীয় কার্যালয় কর্তৃক তদন্ত কমিটির সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এই জহুরুল আলম শাহ চৌধুরীর শুধু মাসিক স্কিমে জমা আছে ৪০ লাখ টাকার মতো আর মেয়াদি আমানতে জমা আছে আনুমানিক ৪৪ লাখ টাকার মতো। মাঠকর্মী জহুরুল আলম শাহ চৌধুরী ও ম্যানেজার মোস্তাফিজার রহমানের কর্মকালীন সময়ে যে পরিমান অনিয়ম ও দূর্নীতি হয়েছে তার সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট আবেদন করেছেন ব্যাংকের বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এদিকে, অডিট অফিসের কর্মকর্তা (আইটি অডিট) জহুরুল আলমের ঘুষবাণিজ্য ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিবেদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করে সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার কামনা করেছেন ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী। রাকাব অডিট কর্মকর্তা জহুরুল আলম ব্যাংকে যোগদানের পর থেকেই ঘুষ-বাণিজ্য, পরলোভী, পরশ্রীকাতর ও মাদকসেবন করে থাকে বলে অভিযোগকারী একই ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ঋণগ্রহীতারা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকটিকে ধ্বংসের হাত বাচানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে।
অভিযোগ পেয়ে রাকাব রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় চলতি বছরের ৩১ আগস্ট ব্যাংকের নীলফামারী জোনাল ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমানকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়। এই তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যাংকের দিনাজপুর দক্ষিণ জোনাল নিরীক্ষা কার্যালয়ের আইটি অডিট জহুরুল আলম শাহ চৌধুরীর ঘুষ-বাণিজ্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার শুনানী ও তদন্তকার্য সম্পন্ন করেন।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রাকাব নীলফামারী জোনাল ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাকাব রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় থেকে আমাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেন গত ৩১ আগস্ট। সেই মোতাবেক চলতি মাসের ৬ তারিখে সরেজমিনে শুনানী ও তদন্তকার্য সম্পন্ন করি। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন ব্যাংকের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে জমা দেই বলে জানান তিনি।
অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের দিনাজপুর দক্ষিণ জোনাল নিরীক্ষা কার্যালয়ের আইটি অডিট জহুরুল আলম শাহ চৌধুরী জানান, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক দিনাজপুর দক্ষিণ জোনাল ব্যবস্থাপক মো. জাফর মল্লিক জানান, আমার জানামতে জহুরুল আলম একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান অডিট কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় রাকাব রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত টিম সরেজমিনে তদন্ত করে গেছেন। এমনকি তদন্ত রিপোর্টও বিভাগীয় কার্যালয় জমা পড়েছে, জেনেছি। এই রিপোর্ট রাকাব হেড অফিস হয়ে দিনাজপুরে আমার কাছে আসবে। তারপর জানাতে পারবো বলে জানান তিনি।
এএজেড