ধর্ম যার যার এ দেশ সবার: মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, ধর্ম যার যার এ দেশ আমাদের সবার । সেই চিন্তা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। সব ধর্মের মানুষের কিছু দুষ্ট লোক থাকে। যে দুষ্ট লোকের কোন ধর্ম নেই, বর্ণ নেই, সম্প্রদায় নেই। তাদের কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই। এদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে সম্প্রীতির সমাবেশে সম্প্রীতির মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, পুলিশ সুপার মোঃ তারিকুল ইসলাম, পৌর মেয়র ইসলাম বেবী।
মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের চার মূলনীতি (গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র) নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ হলো । সকল ধর্মের, বর্ণের মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এ সম্প্রীতির কারণে আমরা ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জন করেছি। সে সম্প্রীতির বাংলাদেশ হলো বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
বিভিন্ন ধর্মের কল্যাণে বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ইসলাম প্রচারের জন্য বঙ্গবন্ধু ইসলামিক ফাউন্ডেশন করলেন। মাদ্রাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়ার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড করলেন । তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমাম হজুরদের কল্যাণের জন্য কল্যাণ ফাউন্ডেশন করলেন। সর্বোপরি মুসলিম হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সকলের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করলেন।
সম্প্রীতির সমাবেশে বান্দরবানকে সম্প্রীতির সুতিকাগার বলে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, সম্প্রীতির সুতিকাগার হলো বান্দরবান। কারণ সারাদেশে বিভিন্ন সম্প্রদায় ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে আছে । বান্দরবানের মতো এত সম্প্রদায় দেশের আর অন্য কোন জেলায় নেই।
মন্ত্রী আরো বলেন, আদিকাল থেকে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে ভাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হয়ে একে অন্যের সুখে দুখে সাথী হওয়ার ব্যাপারটি বান্দরবানে অনেক আগে থেকে ছিল । সম্প্রীতি আমাদের মধ্যে সবসময় ছিল । আজকে নতুন যুগে এসে এ সম্প্রীতি শব্দটি উদ্ভাবন হলো । সম্প্রীতি নিয়েয় আমাদের জন্ম।
সমাবেশে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বান্দরবানে ১১ টি জাতির বসবাস। তাদের প্রত্যেকের প্রথাগত আইন আছে। প্রত্যেকে আইন মানে, নিয়ম কানুন মানে বলেই সবাই পাশাপাশি বসবাস করে আসছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রের আইন না মানার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ধর্মের কারণে শান্তি আসে। ধর্মকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়। সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বান্দরবানকে একটি মডেল জেলা হিসেবে দেখা যায়। এদিকে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি তার সভাপতিত্বের বক্তব্যের বলেন, ১২ জাতির ঐকতান, সম্প্রীতির বান্দরবান। সম্প্রীতির দেশে বাস করি। আবহমান কাল থেকে আমরা একসাথে মিলেমিশে বাস করছি। পূজা, পার্বণেও আমরা এক সাথে কাজ করি।
তিনি আরো বলেন, সামাজিক মাধ্যমগুলো কঠোরভাবে মনিটর করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোন ধরনের যদি উস্কানিমূলক বক্তব্য ছড়ায় তাহলে তার প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আমাদের প্রত্যেকের যে নিজ নিজ দায়িত্ব আমাদের সর্তকভাবে পালন করতে হবে। অনুষ্ঠানের প্রথমেই হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান এ চার ধর্মের গুরুরা ধর্মে শান্তির কথা আগত অতিথিদের মাঝে তুলে ধরেন।
এএজেড