নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে শরিয়তপুরে হানিফ বাংলাদেশী
বাংলাদেশে চলমান দুর্নীতি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে 'বদলে যাও বদলে দাও' স্লোগান নিয়ে ঢাকা থেকে শরীয়তপুরে এসেছেন মোহাম্মদ হানিফ বাংলাদেশী (৩৫)। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর মাইজদী থাকেন ঢাকাতে। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় হাতে প্ল্যাকার্ড ও গলায় প্রতিবাদী ফেস্টুন ঝুলিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরে তিনি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন।
জানা গেছে, গত ৫ জুন কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে মোহাম্মদ হানিফ বাংলাদেশী এই কর্মসূচি শুরু করেন। তার এই কর্মসূচির ১০২ তম দিনে ৩১ তম জেলা ও ২১৯ তম উপজেলা হিসেবে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় আসেন। তিনি ৬৪ জেলা ও ৪৯৫ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন।
তিনি প্রতিদিন ৩ উপজেলা প্রদক্ষিণ করে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলায় গিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত করবেন। এর আগে হানিফ বাংলাদেশী ঢাকা শহরসহ দেশের জনবহুল স্থানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের আন্দোলন করে। ২০১৩-২০১৪ সালে দেশে যখন জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয় তখন দুই নেতৃত্ব বরাবর স্বারকলিপি দেয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে ভোটাধিকার এর দাবিতে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পায়ে হেটে পদযাত্রা করে। ২০২০ সালে সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৬৪ জেলা প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক অফিসে স্বারকলিপি দেয়। ২০২০ সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে পদযাত্রা করে। ২০২১ সালে দেশব্যাপী মার্চ ফর ডেমোক্রেসি গণতন্ত্রের জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে। ২০২১ সালে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রনয়নের দাবিতে মাথায় ভোটের বাক্স নিয়ে ৬৪ জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্বারকলিপি দেয়।
কর্মসূচি সম্পর্কে হানিফ বাংলাদেশী বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বক্ষেত্রে সামাজিক পারিবারিক মানবিক মূল্যবোধ চরম অবক্ষয় চলছে। ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের উপর পূর্বের সরকারে যারা ছিলো সে সময়েও নগ্ন হস্তক্ষেপ হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার হয়েছে। সামাজিক মানবিক পারিবারিক মূল্যবোধর অবক্ষয় পূর্বেও ছিলো এখন আরো চরম আকার ধারণ করেছে। দেশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু মানবিক মূল্যবোধের পতন হচ্ছে।
তিনি বলেন বলেন, আমি দেশের নানা অসঙ্গতি নিয়ে সব সময় প্রতিবাদ করে থাকি। এখন ৫০ বছর ধরে চলমান দুর্নীতি দুঃশাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেছি।
হানিফ বাংলাদেশী আরও বলেন, আশাকরি সম্ভববনাময় এই অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এবং চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঘুষ, দুর্নীতি ও অর্থপাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে যুবকদের মাঝে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সহজ শর্তে ঋণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ভোট গণতন্ত্র আইনের শাসনের মান উন্নয়নে আরো যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমার এই কর্মসূচিতে দেশবাসী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনাী ও সাংবাদিক ভাইদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
এএজেড