সিরাজগঞ্জে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা। আর এ পূজাকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের পালপাড়ার প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পীরা। এদিকে ধীরে ধীরে পূজার সময় ঘনিয়ে আসায় কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি বাড়ির পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন নারীরাও।
কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটের পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নাটোর, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন এসে প্রতিমা তৈরি করতে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার দরদাম করছেন এবং অগ্রীম টাকাও দিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) শ্রীকান্ত (৪০) বলেন, আরো দুই মাস আগে থেকে আমরা এই প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। ৪০টি প্রতিমা অর্ডারের মধ্যে ২১টি সেট করেছি। এখন মাটির ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। এর পরে হাত-পা লাগানো হবে। তারপরে রংয়ের কাজ করা হবে। এদিকে আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে শারদীয় দূর্গাপূজা। তাই সময় ঘনিয়ে আসায় আমাদের কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যার কারণে সারাদিন কাজ করার পরে রাতেও করতে হচ্ছে কাজ।
পাশেই আরেক কারিগর দীলিপ পাল(৪২)বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর হলো প্রতিমা তৈরি করছি। গত কয়েক বছরে করোনার প্রভাবের কারণে প্রতিমার চাহিদা থাকলেও টাকার পরিমাণ কম থাকায় বড় প্রতিমার অর্ডার থাকত খুবই কম। এবার করোনা কাটিয়ে ওঠায় বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিমা তৈরির অর্ডার পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আগে ১০ হাজার টাকায় একটি প্রতিমা তৈরি করে সেটি বিক্রি করা হতো ২০-২২ হাজার টাকায়। এখন বাঁশ, কাঠ,সুতা,খড়,রং, কাদামাটিসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি হওয়ায় ১০ হাজার টাকার প্রতিমা তৈরি করতে খরচ হচ্ছে বিশ হাজার টাকায়। যার কারণে এখন প্রতিমা বিক্রি করে তেমন লাভ দেখা হচ্ছে না।
পূজা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় শাহ্ বলেন, আগামী পহেলা অক্টোবর ষষ্ঠী শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর বিজয় দশমীতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আমাদের বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আলোকসজ্জা করা হবে এবং মণ্ডপের তালিকা হাতে পেলে জানানো যাবে কতগুলো মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির জানান, এ বছর শারদীয় দূর্গা পূজার নিরাপত্তার বিষয়ে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাথে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসআইএইচ
