চিলাহাটিতে থমকে আছে রেলস্টেশনের পুনর্নির্মাণ কাজ
উত্তরাঞ্চলের শেষ স্টেশন চিলাহাটি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত, যার আধুনিকায়নে নির্মাণ কাজ প্রায় এক বছর ধরে থমকে আছে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে নির্মাণসামগ্রী। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ নিয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ বন্ধ থাকায় মূল ভবনের পিলারের রডগুলো মরিচা ধরে জরাজীর্ণ হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি দুই দেশের পরিকল্পনা অনুযায়ী চিলাহাটি রেল স্টেশনের বন্ধ হয়ে যাওয়া নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করা। চিলাহাটি রেল স্টেশনের কাজ শেষ হলে লাভবান হবে উভয় দেশ, বদলে যাবে উভয় এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিচ্ছবি।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল মংলা বন্দর হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর চিলাহাটি রেলওয়ের কাজ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ ৫৬ বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় রেল সংযোগ চালু হওয়ার উদ্যোগ দেখে উভয় সীমান্তের সর্বস্তরের জনতা আনন্দিত হয়েছিল। চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে ভারতের সীমানা পর্যন্ত ৬ হাজার ৭২৪ কিলোমিটার রেললাইন পাতানোর কাজ শেষে হলদিবাড়ির সঙ্গে রেল সংযোগ দেওয়া হয়েছিল।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল সংযোগের পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর পণ্যবাহী এবং ২০২১ সালের ২৭ মার্চ যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সে ধারাবাহিকতায় গত ১ আগস্ট থেকে পণ্যবাহী ট্রেন নিয়মিত চলাচল শুরু করে ২০ দফায় হলদিবাড়ি থেকে চিলাহাটি স্টেশনে প্রবেশ করে।
চিলাহাটি স্টেশনের দুটি লেভেল ক্রসিং গেট, স্টেশন সংলগ্ন তিনটি নতুন লুফ লাইন স্থাপন, অত্যাধুনিক প্লাটফর্ম, এ্যাপ্রোচ রোড, কাস্টম, চেকপোস্ট, রেল স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরসহ অন্য কাজ শেষ না হওয়ায় এখন যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্টেশনের আধুনিক দ্বিতল ভবণ নির্মাণের জন্য ১৭৫টি পাইলিং শেষে ৯২টি পিলারের পাইল ক্যাপ স্থাপন করার পর সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে তাদের শ্রমিকদের সরিয়ে নিয়েছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন জাগছে, আদৌ কি চিলাহাটি স্টেশনের কাজ হবে? চিলাহাটি স্টেশনের বন্ধ হওয়া নির্মাণ কাজ শেষ করা না হলে কীভাবে চলবে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন? কাস্টম ইমিগ্রেশনসহ বৈদেশিক যাত্রীদের উঠানামার ব্যবস্থাই বা কী হবে?
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রোকনুজ্জামান সিয়াব জানিয়েছেন, প্রায় ২২ কোটি টাকার অতিরিক্ত কাজ করা হয়েছে। বাড়তি প্রকল্পের কাজগুলো ডিপিপি থেকে আরডিপি না হওয়ার কারণে নতুন করে অর্থ সংস্থান হচ্ছে না। যে কারণে এখন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে গেলে আবার কাজ শুরু হবে।
/এএন