ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন, ৩৮ মরদেহ উদ্ধার
ছবি : সংগৃহীত
ঝালকাঠিতে মাঝনদীতে যাত্রীবোঝাই লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ সহকারী পরিচালক বিল্লাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী। দগ্ধ অবস্থায় অর্ধ শতাধিক যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
বিল্লাল উদ্দিন বলেন, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি।
তবে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে ৩৭ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। লঞ্চে প্রায় এক হাজার যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে।
যাত্রীরা জানান, ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। পরে লঞ্চটি নদীর তীরের দিয়াকুল গ্রামে এলাকায় ভেড়ানো হয়।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, তাদের মোট পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোসহ উদ্ধার কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। প্রাণে বাঁচতে বেশ কয়েকজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
ঘটনাস্থলে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, বাতাসের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে। যতক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই লঞ্চটির এমন কোনো অংশ নেই যেখানে আগুনের ভয়াবহতা পৌঁছেনি। কেবিনে থাকা যাত্রীরা সেখানেই পুড়ে ছাই হয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত করা হবে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, আগুনে ৭০-৮০ জন দগ্ধ হয়েছেন। বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধদের দ্রুত পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুরুতর দগ্ধদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, লঞ্চটিকে বর্তমানে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউড়ি সাইক্লোন শেল্টারের পাশে (বিষখালী নদীর তীরে) নোঙর করা হয়েছে।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নদীতীরে স্বজনরা ভিড় করছেন। এই ভিড় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে। বাড়ছে নদীর তীরে স্বজনদের আহাজারি। এদের মধ্যে বেশিরভাগই জানেন না তাদের প্রিয়জনের ভাগ্যে কী ঘটেছে।
লঞ্চে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
টিটি/এসএ/