রাঙ্গবালীতে নারীকে মারধরের অভিযোগ গ্রামপুলিশ ও যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে
পটুয়াখালীর রাঙ্গবালীতে গ্রাম পুলিশ মো. সানু চৌকিদার (৫৫) এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আলমগীর মোল্লার (৫০) বিরুদ্ধে শিরিনা আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরলক্ষী গ্রামে গৃহবধূরকে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূ ১০ দিন ধরে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার শরীরে জখম দেখা গেছে।
এ ঘটনার পর শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুরে ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মসজিদের ইমাম মো. মালেক মোল্লাকে মসজিদ থেকে ধরে নিয়ে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখেন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আবুমিয়া।
এরপর থেকে এলাকা ছাড়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দুই ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ মো. সানু চৌকিদার এবং একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি আলমগীর মোল্লা। অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়েছেন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আবুমিয়া।
শিরিনা আক্তার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ি এবং বাবার বাড়ি একই এলাকায়। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমার বাবা শাহ আলম মোল্লা অসুস্থ হয়ে পরেন। এ অবস্থায় আমি তাকে দেখতে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। ওই বাড়ির কাছে পৌঁছলে সানু চৌকিদার ও আলমগীর মোল্লাসহ ৪-৫ জন লোক আমার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়, এতে আমার মাথা ফেটে যায়। এ সময় আমাকে উদ্ধার করতে বড় বোন চাম্পা বেগম এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। ওই চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেয়। পরে আমার স্বজনরা পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখন আমরা আতঙ্কে আছি, এলাকায় ফিরে গেলে তারা আবারও আমাদের মারধর করবে।
তিনি আরও বলেন, তাদের সাথে আমার বাবার জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। এর আগেও আমার বাবা শাহ আলম মোল্লাকে মারধর করে দাঁত ভেঙে দিয়েছে তারা এবং আমার ভাইকে মারধর করে পঙ্গু করে দিয়েছেন।
মসজিদের ইমাম মো. মালেক মোল্লা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না, শুক্রবার নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। মসজিদ পরিস্কার করে নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এ সময় দুইজন লোক এসে মসজিদ থেকে আমাকে ধরে নিয়ে যায়। ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে চেয়ারম্যান (শামসুদ্দিন আবুমিয়া) জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখেন। এসময় ইউপি সদস্যরা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সানু চৌকিদার মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, শিরিনা (আক্তার) আমার ভাইজি। তার বাবার জমি দলিল করে নিয়েছেন তারা তিন ভাইবোন মিলে। এই নিয়ে তার এক ভাইয়ের সাথে সমস্যা হয়েছে।
ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আলমগীর মোল্লার মুঠোফোনে কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আবুমিয়া ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, মারধরে বিষয়টি আমার জানা নেই। সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নয়ন সরকার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুগলুল হায়দারকে একাধিক বার ফোন করে তার সাথে কথা বলা যায়নি।
এমএসপি