বাবা-মাকে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করল ছেলে
লালমনিরহাটে ছেলের দ্বিতীয় বিয়ের কারণ ও জমা রাখা টাকা ফেরত চাওয়ায় বাবা-মাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মঞ্জুর আলমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন তার পিতা মো. আব্দুল করিম। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ইউপি চেয়ারম্যান, আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের বালাপুকুর এলাকার মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল করিম বিয়ের পর থেকে পরিবারসহ শ্বশুরের বাড়িতে বসবাস করছিল। তার (আব্দুল করিম) শ্বশুরের ছেলে সন্তান না থাকায় নাতী মঞ্জুর আলমকে বাড়ির অংশ থেকে ৩০ শতক সম্পত্তি দান করে। পরে ইউপি সদস্য মঞ্জুর আলম তার বিবাহিত প্রথম স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে যৌতুকের কারণে বাড়ি থেকে বের করে দেয় এবং অবৈধভাবে একটি মেয়ের সঙ্গে পরকিয়া সম্পর্ক করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরকিয়া এবং পরে দ্বিতীয় বিবাহে বাধা দেন পরিবারের সদস্যরা। পরে তার বাবা-মা কারণ জানতে চাইলে মঞ্জুর আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তার মা-বাবাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে।
অভিযোগে উল্লেখ করে ইউপি সদস্যের পিতা আব্দুল করিম আরও বলেন, দ্বিতীয় বিবাহ ও প্রথম স্ত্রীকে বের করে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলেই নানা হুমকি দেয় ছেলে। এ ছাড়া জমা রাখা টাকা চাইতে গিয়ে গালিগালাজ শুনতে হয়। এ নিয়ে এলাকার গন্যমান্যরা বৈঠক ডাকলেও ছেলে মঞ্জুর আসেন না। বিষয়টি গণ্যমান্যদের জানানো ও বিচার চাওয়ায় গত ২৩ ডিসেম্বর পিতা-মাতাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ইউ সদস্য মঞ্জুর। পরে তারা প্রতিবেশী আ. রাজ্জাকের পরিত্যাক্ত একটি ঘরে ঠাই নেন। এর ১৫-২০ দিন পর পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় লোকজন একটি ঘর নির্মাণ করে দেন। বর্তমানে তারা সেখানে বসবাস করছে।
এ বিষয়ে ইউপির সদস্য মঞ্জুর আলমের বাবা আব্দুল করিম ও মা মর্জিনা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, তারা এখন ভয়ে আছে। বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে ছেলের নিকট জমা রাখা টাকা চাইলে ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রী বিভিন্ন হুমকি দেয়। এ ছাড়া বাইরের কারো নিকট এগুলো নিয়ে কথা বললে বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে বলে ছেলে তার বউ সবাইকে বলে বেড়ায়। তাই নিরুপায় হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানান তারা।
এদিকে ইউপি সদস্য মঞ্জুর আলম ঘটনাটি সত্য নয় বলে এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জে আর সারোয়ার জানান, লিখিত কাগজটি এখনও হাতে পাই নি। কাগজ হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
এসআইএইচ