বেতনের টাকা পরিশোধ করতে শিক্ষার্থীদের পেটালেন প্রধান শিক্ষক
বকেয়া বেতনের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তালতলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গত ৬ মার্চ ক্লাস চলাকালীন বকেয়া বেতন দিতে না পারা শিক্ষার্থীদের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ওইদিন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে স্কুল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রায় দুই ঘণ্টা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, 'তালতলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে মারধর করেন। ঘটনার দিন সকালে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টির অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। ওইসময় যাদের বকেয়া বেতন বাকি তাদের অফিসকক্ষে যাওয়ার জন্য বলেন। ওইসময় বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ফারুক, আরমান, জিম, অপু, ফয়সাল আহম্মেদ, শরিফুল ইসলামসহ অনেকে প্রধান শিক্ষকের কথামতো তার অফিসকক্ষে যান। তবে কোনকিছু বুঝে ওঠার আগেই বকেয়া বেতন পরিশোধ না করার কারণে শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়িভাবে বেত দিয়ে মারধর করেন তিনি।'
ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'করোনার কারণে আমাদের সবার পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তার উপর বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমাদের পিতামাতা ঠিকমত প্রয়োজনীয় দ্রব্যও কিনতে পারছেন না। পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা স্যারদের বুঝিয়েছি। যাতে বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য আমাদের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে স্যাররা আমাদের কথা শোনেননি।'
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, 'ঘটনার দিন থেকে আমরা বিস্মিত। বকেয়া বেতন পরিশোধ না করায় একজন প্রধান শিক্ষক কীভাবে শিক্ষার্থীদের মারধর করতে পারেন? আমাদের সন্তানরা যদি কোনো অন্যায় করে তাহলে শিক্ষকরা শাসন করতে পারেন। তবে বেআইনিভাবে আমাদের সন্তানদের মারধর করা প্রধান শিক্ষকের উচিত হয়নি।'
এসময় এঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, 'বিষয়টি সস্পর্কে অবগত নন তিনি। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
টিটি/