আদেশ অমান্য করায় ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা
আদালতের আদেশ অমান্য করে অন্যের জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের অভিযোগে বরগুনার তালতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
সোমবার (৭ মার্চ) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আতিকুল হক।
তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার আমতলী সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করেন বদলুর আলম বাবুল নামের এক ব্যক্তি।
আইনজীবী আরও জানান, ইউএনও কাওছার হোসেন ছাড়াও সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও বড়বগী ইউনিয়নের তফসিলদারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য তাদের বলেন।
জানা যায়, তালতলীতে সহকারী কমিশনার না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী ভূমি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে আছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা বড়বগী মৌজার ৩ হাজার ৯৯৩ ও ৪ হাজার দাগের চার একর কৃষি জমি ১৯৬৪-৬৫ সালে মৌলবী লতিফ ও সিদ্দিকুরকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেয় সরকার। পরে ১৯৮১ সালে ওই চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও রেকর্ডিং জমি থেকে বদলুর আলম বাবুলসহ কয়েকজনের কাছে ২ একর ৬৭ শতাংশ বিক্রি করেন তারা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করেন। কোনো প্রকার নোটিশ ও উচ্ছেদের কাগজপত্র ছাড়াই প্রথমে রেকর্ডিয় সম্পত্তি দিয়ে জোর করে রাস্তা নির্মাণ করেন। আদালতের লিখিত নোটিশ অন্য তিনজন গ্রহণ করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার গ্রহণ করেননি। পরে তিনি ওই জমি দখলে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের জন্য ভরাট করেন।
বিষয়টি বাদীপক্ষ আদালতকে জানান। আদালত ওই জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন এবং বলেন, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই জমিতে কোনো প্রকার কাজ করা হবে না। তবে ইউএনও আদালতের আদেশ অমান্য করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ শুরু করেন।
পরে ৪ মার্চ আমতলী সহকারী জজ আদালতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওছার হোসেন ছাড়াও সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো, সার্ভেয়ার ও তফসিলদারে বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার-সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চান।
বাদী বদলুর আলম বাবুল বলেন, আমাদের রেকর্ডিয় সম্পত্তি ও সরকারি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের জমিতে ইউএনও কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই দখলে নিয়েছেন। এরপরে আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা করি। আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন কিন্তু তিনি সেই আদেশ মানেন নাই। এ জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাওছার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
এমএসপি