এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে স্পর্শ করে অসুস্থ হলেন ৩১ শিক্ষার্থী, ভয়ঙ্কর রোগের আশঙ্কা
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে অসুস্থ শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত
ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছিল এমন সময় হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থী। এসময় তাকে সেবা দিতে এগিয়ে আসে সেখানে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। এসময় অসুস্থ হয়ে পড়ে আরো ৩১ শিক্ষার্থী। অসুস্থ ওই ছাত্রকে যে-ই স্পর্শ করেছে সে-ই অসুস্থ হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে পশ্চিম ইলিশা ৪ নম্বর ওয়ার্ডে পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে পশ্চিম চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ বলেন, গণিত স্যার আমাদের ক্লাস নিচ্ছেন। হঠাৎ করে দেখলাম আমি মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছি। এমনভাবে মাথা ব্যাথা উঠছে মনে হয়েছে চুলগুলো উঠিয়ে ফেলি। আমার এমন অবস্থা দেখে স্যাররা আমাকে লাইব্রেরিতে নিয়ে যায়। পরে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি হাসপাতালে।
সিয়াম নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, আমার সাথের একটা ছাত্র হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। তাকে ধরতে গিয়ে একে একে আমরা ৩০/৫০ জনের মত অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
ক্লাস শিক্ষক আবু ছাঈদ বলেন, আমি ক্লাস নিচ্ছি এমন সময় জিহাদ অসুস্থ হলে তাকে অন্যদের ধরতে বলি। এর কিছুক্ষণ পরেই দেখি যেই ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যায়। আমারও মাথা ঘুরেছে এবং চোখ দিয়ে হঠাৎ পানি পড়া শুরু করেছে।
আবু কালাম নামের এক অভিভাবক বলেন, স্কুল থেকে এক স্যারে বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেছে আমার ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে দেখি কেউ মাথা চাপড়াচ্ছে আর কেউ অজ্ঞান অবস্থায় আছে। যে ধরে সেই অসুস্থ হয়ে যায়। এখন এটা কি রোগ সেটা তো জানি না।
দক্ষিণ চরপাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, গণিত ক্লাসে হঠাৎ এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করে তার বাবা-মাকে খবর দিয়েছে এবং ওই ছাত্রকে প্রাথমিক সেবা দিচ্ছি এর মধ্যেই দেখি যারাই এ ছাত্রকে ধরে সেই একটা চিৎকার দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তাদের হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, স্কুল থেকে বাসায় গিয়েও অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার তায়েবুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ৩১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। হঠাৎ ছাত্র-ছাত্রীরা মাস্ক সাইকোজেনিক ইলন্সে নামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আতঙ্কের কিছু নেই তারা শিগগিরই সুস্থ হয়ে যাবে।