ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি লঙ্ঘিত হলে বিশ্ব সমাজে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ভারত যদি তাকে ফেরত না দেয়, তবে তা স্পষ্টতই চুক্তি লঙ্ঘন হবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা যা যা করণীয়, তা করছি। প্রয়োজন হলে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া গায়েবি ও রাজনৈতিক মামলাগুলো আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “দেশের ২৫টি জেলায় চিহ্নিত আড়াই হাজার গায়েবি ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় লাখ লাখ মানুষ আসামি। সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে থাকা মামলাগুলোও প্রত্যাহার করা হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
তিনি আরও জানান, সাইবার সিকিউরিটি আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে।
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এতে প্রধান বিচারপতিকে প্রধান করে ছয় সদস্যের ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলনের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের জন্য প্রয়োজনে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “বিচার ও নির্বাচন আয়োজন সাংঘর্ষিক হবে না। সাংবিধানিক কোনো বিষয় অন্তর্বর্তী সরকার লঙ্ঘন করবে না।”
এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন আইন ও সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি।