১ মাস পর সৌদিতে নিহত দুই বাংলাদেশির মরদেহ পেল স্বজনরা
সৌদি আরবে ওমরা করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন দুই বাংলাদেশি শ্যালক ও দুলাভাই। এক মাস ৪ দিন পর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে তাদের মরদেহ দেশে এসে পৌঁছায়। পরে গভীর রাতে লাশবাহী গাড়িতে করে নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদে সাগরের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে সকাল ৯টায় পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ছৈলাবুনিয়ায় দুলাভাই মোজাম্মেলের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওমরাহ হজ্জ করে ফেরার পথে এই দুই শ্যালক দুলাভাই বাংলাদেশ সময় ২৫ মার্চ রাত ৮টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান। তারা সৌদি আরবের আলগাছিমের উনাইয়ায় ব্যবসা করতেন।
নিহত সাগর জোমাদ্দারের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের বটতলা গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মোতাহার জোমাদ্দারের ছেলে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সাগর সবার ছোট। আর দুলাভাই মোজাম্মেল হোসাইনের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত আজিজ মৃধার ছেলে। গত ২৩ বছর আগে তিনি সৌদি আরব গিয়েছিলেন এবং সর্বশেষ ৮ বছর আগে তিনি দেশে এসেছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্ঘটনার অনেক দিন পর প্রিয়জনের লাশ কাছে পেলেও চলছে আহাজারি। শোকস্তব্ধ পুরো বাড়ি। ছেলে ও মেয়ে জামাইকে হারিয়ে বিলাপ করছেন মোতাহার জোমাদ্দার।
মোতাহার জোমাদ্দার জানান, সৌদিতে কোটি টাকার ব্যবসা ও পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা নিঃস্ব ও চরম অসহায় হয়ে পড়েছেন। লাশ দেশে নিয়ে আসার জন্য তিনি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাগর জোমাদ্দারের স্ত্রী শান্তা আক্তার বলেন, ‘সাত বছর প্রেমের পর সাগরের সাথে আমার বিয়ে হয়। কিন্তু দুই মাসের বেশি সংসার করতে পারিনি। এত অল্প সময়ে আল্লাহ তাকে নিয়া গেল, আমি কার জন্য এখন বাচঁবো?’
মোজাম্মেল জোমাদ্দারে স্ত্রী রুবিন ইয়াসমিন বলেন, ‘২৩ বছর আগে আমার স্বামী ব্যবস্যা করতে সৌদি আরবে গিয়েছিল। সর্বশেষ ৮ বছর আগে দেশে এসেছিল সে। ছেলে-মেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করবে কিন্তু তার আগেই কিছু না বলে চলে গেল।’
এ ব্যাপারে হোসনাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সৌদি আরবে বসবাসকারীদের সহযোগিতায় তাদের লাশ দেশে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ